November 26, 2024
খেলাধুলাশীর্ষ সংবাদ

আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট থেকে অবসরের ঘোষণা মাহমুদউল্লাহর

নানা নাটকের পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আজ সন্ধ্যার পর সংবাদ মাধ্যমের কাছে পাঠানো এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাহমুদউল্লাহর অবসরের ঘোষণা জানিয়ে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

গত জুন-জুলাইতেই জিম্বাবুয়ে সফরে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তখন দলের মধ্যে অবসরের বিষয়টি নিয়ে তিনি আলোচনা করেছিলেন। ম্যাচের শেষ দিন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা তাকে গার্ড অব অনারও দিয়েছিল।

কিন্তু দলের মধ্যে সবাই জানলেও ঘোষণাটা আনুষ্ঠানিকভাবে এতদিন দেননি তিনি। মিডিয়ায়ও এ নিয়ে কথা বলেননি। এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।

এবারও পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ চলাকালে মাহমুদউল্লাহকে টেস্ট সিরিজে খেলার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, ‘কখনোই না (টেস্টে ফিরবেন না)।’ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন যদিও মাহমুদউল্লাহর এমন হঠাৎ অবসর নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন এবং আশা করেছিলেন রিয়াদকে টেস্ট থেকে অবসর নিতে দেবেন না।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণাটা দিয়েই দিলেন তিনি। সাদা পোশাকের ক্রিকেট তিনি আর খেলবেন না। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরুর একদিন আগে এই ঘোষণা দিলেন টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক।

২০০৯ সালের ৯ জুলাই কিংসটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। এরপর খেলে গেলেন একযুগ। অবশেষে এসে সমাপ্তি রেখা টানলেন ১২ বছরের ক্যারিয়ারের।

৩৫ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ৫০টি টেস্ট। ৩৩.৪৯ গড়ে রান করেছেন ২৯১৪। সর্বোচ্চ ইনিংস হলো অপরাজিত ১৫০। গত জুলাইতে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। ওই ম্যাচেই খেলেছিলেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটি। যা ছিল তার ক্যারিয়ারের ৫ম টেস্ট সেঞ্চুরি। ওই ম্যাচের সেরাও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশ জিতেছিল ২২০ রানের বিশাল ব্যবধানে।

টেস্ট ক্যারিয়ারে ৪৩টি উইকেটও নিয়েছিলেন রিয়াদ। ৬টি টেস্ট ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

বিদায় বেলায় যে বার্তা দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাতে মিশে ছিল কষ্টের প্রলেপ। তিনি বলেন, ‘যে ফরম্যাটে আমি দীর্ঘদিন দলের অংশ ছিলাম, সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়। আমি সব সময়ই মাথা উঁচু করে চলতে চেয়েছি এবং বিশ্বাস করি, এখানই টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করার সঠিক সময়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিসিবি সভাপতির প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, যখন আমি টেস্ট দলে ফিরে আসি তিনি আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। দলের সব সতীর্থকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। একই সঙ্গে সব সাপোর্ট স্টাফকেও। তারা সবাই আমাকে সব সময় উৎসাহ দিয়েছেন এবং আমার সামথ্যের ওপর আস্থা রাখতে পেরেছিলেন। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারাটা সব সময়ই একটা সম্মানের বিষয়। অনেক স্মৃতি জমা হয়ে আছে, যা সারাজীবন আমার মনে পড়বে।’

টেস্ট থেকে বিদায় নিলেও ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমি টেস্ট থেকে অবসর নিচ্ছি হয়তো। তবে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলা চালিয়ে যাবো। সাদা বলের ক্রিকেটে দেশকে নিজের সেরাটা ঢেলে দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে আমার।’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *