আদালতে সাবরিনা-আরিফুল, অভিযোগ গঠনের শুনানি
করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় জালিয়াতি-প্রতারণা মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী, তার স্বামী ও প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ আট আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) সকালে তাদের আদালতে আনা হয়।
এরপর বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার মট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে তোলা হয়। এরপর বেলা ১২টার দিকে আদালত মামলার শুনানি দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মুলতবি করেন।
গত ১৩ আগস্ট একই আদালতে এই মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু পরে আসামি পক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শুনানির জন্য ২০ আগস্ট দিন ধার্য করেছিলেন।
এর আগে গত ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। অভিযোগপত্রটি দেখার পর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকার হায়াত তা বিচারের জন্য বদলির আদেশ দেন। এরপর মামলাটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে আসে।
অভিযোগপত্রে সাবরিনা ও আরিফুলকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মূলহোতা ও বাকি ছয়জনকে অপরাধে সহায়তাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অন্য ছয় আসামি হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।
এই মামলায় আসামিদের কয়েক দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গত ২০ জুলাই দ্বিতীয় দফায় দুইদিনের রিমান্ড শেষে সাবরিনাকে এবং তার একদিন আগে আরিফুলকে কারগারে পাঠানো হয়।
গত ১২ জুলাই সাবরিনাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পরদিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সেই রিমান্ড শেষে দ্বিতীয় দফায় গত ১৭ জুলাই আরও দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
করোনার ভুয়া রিপোর্টদানকারী প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্ণধার আরিফুল চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরী জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন চিকিৎসক। এছাড়া জেকেজির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে সাবরিনা ছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়।
গত ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে আরিফুলসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর থানা হাজতে থাকা অবস্থায় আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী ভাঙচুর ও হামলা করে থানায়। মারধর করে পুলিশকে।
এছাড়া রাজধানীর মহাখালীর তিতুমীর কলেজে নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণের নামে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে। কলেজের কক্ষে নারী-পুরুষের আপত্তিকর অবস্থানসহ নানা অনৈতিক কাজে বাধা দিলে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রদের ওপরও হামলা করে আরিফুলের লোকজন।
অভিযোগ পাওয়া যায়, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান গ্রেফতার সাহেদের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্নজনকে হুমকি দিতেন আরিফ। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালককেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
জেকেজির কর্ণধার স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ বিক্রি করেছেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য জনপ্রতি নিয়েছেন সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি তারা নিতেন ১০০ ডলার।