আজ থেকে উৎপাদনে যোগ দিচ্ছে ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা
দ: প্রতিবেদক
পাটমন্ত্রী গেলাম দস্তগীর গাজীর প্রতিশ্রæতিতে টানা ৫ দিন পর অনশন ভঙ্গ করেছে খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মজুরী কমিশন বাস্তবায় করার আশ্বাসে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে গতকাল শুক্রবার ভোর পর্যন্ত খালিশপুর, আটরা ও নওয়াপাড়া অঞ্চলে আন্দোলনরত শ্রমিকরা অনশনস্থল ত্যাগ করেন। আজ শনিবার স্ব স্ব কাজে যোগ দিয়ে মিলের উৎপান শুরু করবে শ্রমিকরা।
পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরী-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরী ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশোধ, চাকুরীচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহালসহ ১১ দফা দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের নেতারা রাজপথে আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। সে অনুযায়ী ১০ ডিসেম্বর থেকে অনশন কর্মসূচি পালন করে শ্রমিকরা। এই কর্মসূচী চলাকালে ১৩ ডিসেম্বর রাতে খুলনা বিভাগীয় যুগ্ম শ্রম পরিচালকের অধিদপ্তরে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের সাথে জরুরী বৈঠকে বসেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। প্রতিমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতিতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ১৫ ডিসেম্বর বিজেএমসিতে ও ২৬ ডিসেম্বর শ্রম মন্ত্রণালয়ে শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান আবারও প্রতিশ্রæতি দিয়ে একমাস পরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান।
এ সময় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের নেতারা প্রতিমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখান করে আন্দোলনে ফিরে আসে। পুনরায় ঘোষণা দেন অনির্দিষ্টকালের অনশন কর্মসূচির। গত ২৯ ডিসেম্বর দুপুর ২টায় খুলনা-যশোর অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলের শ্রমিকরা খালিশপুর বিআইডিসি রোড়, আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার রাজপথে অনশন শুরু করে। টানা ৫দিন শ্রমিকদের অনশন চলাকালে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ ও পাটকল শ্রমিকলীগের সাথে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ফার্মগেটস্থ জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টারে (জেডিপিসি) জরুরী বৈঠকে বসেন পাটমন্ত্রী গাজী গেলাম দস্তগীর। দীর্ঘ সাড়ে ৩ ঘন্টার এই বৈঠকে মন্ত্রী প্রথমে শ্রমিক নেতাদের কাছে এক মাসের সময় চান। পরে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের নতুন মজুরী কাঠামো অনুযায়ী পে-স্লিপ প্রদানের কথা জানান পাটমন্ত্রী। এ বিষয়ে লিখিত চুক্তি সম্পন্ন হলে সংগ্রাম পরিষদের নেতারা পাটমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীরের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়।
বৃহসপতিবার রাত সাড়ে ১০টায় শ্রমিক নেতারা স্ব স্ব মিলে অন্দোলনস্থলের নেতাদের মোবাাইলের মাধ্যমে বৈঠকের সিদ্ধান্তর কথা জানান। এ সময় ঢাকার বৈঠকে অংশ নেয়ে সংগ্রাম পরিষদের নেতারা অনশন তুলে নিয়ে শনিবার ভোর থেকে মিল চালু করার জন্য শ্রমিকদের প্রতি অনুরোধ জানান। রাত সাড়ে ১১টায় খালিশপুর, ক্রিসেন্ট, ইর্ষ্টন, আলীম, কার্পেটিং ও জেজেআই মিলের শ্রমিকরা অনশন ভঙ্গ করে। তবে গতকাল শুক্রবার ভোর ৫টায় প্লাটিনাম, ষ্টার ও দৌলতপুর জুট মিলের শ্রমিকরা অনশনস্থল ত্যাগ করে। আজ শনিবার ভোর ৬টা থেকে স্ব স্ব কাজে যোগ দিয়ে মিলের উৎপাদন শুরু করবে বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।