আগামীতে টিকা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শিগগির বিভিন্ন উৎস থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা পাওয়া যাবে জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘আগামীতে ইনশাআল্লাহ টিকা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে না।’
রোববার (২৭ জুন) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন দফতর/সংস্থার সঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
করোনাভাইরাসের টিকা আনার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মর্ডানার টিকা আমরা ২৫ লাখ পাচ্ছি। সেটা অল্প দিনেই চলে আসবে। এক্ষেত্রে আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেয়ার বিষয় ছিল, সেটা আমরা দিয়ে দিয়েছি। চীন থেকে টিকা আমরা তাড়াতাড়ি পেয়ে যাব বলে আশা রাখি। আগামী মাসেও চায়নার সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী হয়তো আমরা টিকা পেতে থাকব। কোভ্যাক্স থেকেও আমরা টিকা পেতে থাকব। রাশিয়ার সঙ্গেও হয়তো আমরা চুক্তি সমাপ্ত করতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘টিকা কার্যক্রম আমাদের বন্ধ রাখতে হয়েছিল। আগামীতে বন্ধ রাখতে হবে না। টিকা কার্যক্রম ইনশাআল্লাহ চলমান থাকবে।’
দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যে ৫-৬ হাজার বেড পূর্ণ হয়ে আছে। আপনারা পরবর্তী পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করবেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সঙ্কট এড়ানোর জন্যই তো লকডাউন দেয়া হচ্ছে। আমাদের এখনো চিকিৎসা দেয়ার যথেষ্ট স্কোপ আছে। আমাদের ১২ থেকে ১৫ হাজার বেড সারাদেশে করোনা চিকিৎসার জন্য রেডি করা আছে। এখনো আমাদের যথেষ্ট বেড আছে, আমরা রোগী রাখতে পারব। হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা অনেক আছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রায় এক হাজার ৬০০ অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আছে। ওষুধের কোনো ঘাটতি নেই। সেটা থেকে আমরা মনে করি, সহনীয় পর্যায়ে আছি।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের এখন থেকেই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। আমাদের যদি লক্ষ লোক আক্রান্ত হয়ে যায় তবে তো কষ্ট হবেই। সেজন্য লকডাউন দিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।’
বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘টিকা উৎপাদনের বিষয়ে আমরা নীতিগতভাবে ইডিসিএলকে (সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগ লিমিটেড) অনুমতি দিয়েছি। ইডিসিএলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করার জন্য। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা যা নির্দেশনা, সহযোগিতা দেয়া দরকার, সেটা করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, ইডিসিএল টিকা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করবে। এটা একটু সময় সাপেক্ষ। যত তাড়াতাড়ি পারা যায় আমরা প্রোডাকশনে যাব, এটাই আমাদের চেষ্টা থাকবে।’
কোন দেশের টিকা উৎপাদন হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা উৎপাদন করলে তো বাংলাদেশের টিকাই করব। আমরা যদি কারও সঙ্গে কোলাবরেশনে যাই, সেটাও আমরা দেখব। যদি কেউ আমাদের অফার করে, তাদের টিকা বাংলাদেশে উৎপাদন করবে। তাহলে প্রাইভেট কোম্পানিজ আছে, তারা সেখানে উৎপাদন করতে পারবে। সেই ফ্যাসিলিটি আমাদের নেই, প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর আছে। সেটা আমাদের নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়া আছে।’
গ্লোব বায়োটেকের ‘বঙ্গভ্যাক্স’ ভ্যাকসিনের অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওনাদেরকেও আমরা সহযোগিতা করছি। টিকা তৈরি করার বিভিন্ন পদক্ষেপ আছে। সেই পদক্ষেপগুলো পার হয়ে আসলেই ওনারা টিকা উৎপাদন করতে পারবেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক যে নিয়ম-নীতি আছে, ডাব্লিউএইচও’র যে নিয়ম-নীতি আছে টিকা উৎপাদন করার সেই নিয়ম-নীতিগুলোর পরিপালন করে তারা আসলেই টিকা উৎপাদন করতে পারবে, দেশবাসীকে দিতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিয়ম-নীতি বা স্টেপগুলো কমপ্লিট না করে এখানে টিকা উৎপাদন করতে পারবে না। আমরাও আমাদের জনগণকে দিতে পারব না।’