আক্ষেপ নিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছাড়লেন শরীফ
অনন্য এক অর্জনের হাতছানি ছিল মোহাম্মদ শরীফের সামনে। বাংলাদেশের প্রথম পেসার হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪০০ উইকেট ছুঁতে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৭ উইকেট। কিন্তু চোট আর নানা পারিপার্শ্বিকতায় এই পথকেই তার মনে হচ্ছিল অনেক দূর। তাই কঠিন বাস্তবতার কাছে হার মেনে গেল স্বপ্ন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিলেন এই সংস্করণে দেশের সফলতম পেসার
কিছুদিন ধরেই অবসর ভাবনা তার মাথায় ছিল। ৩৪ বছর বয়সী পেসার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, শনিবার সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন পাকাপাকিভাবে। ইতি টানছেন সাদা পোশাকে ২০ বছরের ক্যারিয়ারের।
করোনাভাইরাসের প্রভাবে থমকে যাওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ যদি শুরু হয় আবার, তাহলে তার ইচ্ছে আছে, মাঠ থেকে ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়ার। লিগ যদি এবার আর না হয়, তাহলে তার খেলোয়াড়ী জীবনেরও এখানেই ইতি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার পরিচয় ছিল ‘ফাইটার’ হিসেবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন দারুণ আবেগ দিয়ে। প্রতিকূল উইকেট, কন্ডিশন ও পেসারদের জন্য কঠিন বাস্তবতার কারণে যে দেশের পেসাররা বরাবরই বড় দৈর্ঘের ক্রিকেট বিমুখ, শরীফ সেখানে ছিলেন আশ্চর্য ব্যতিক্রম। এই সংস্করণেই খেলে গেছেন নিবেদন দিয়ে।
বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার রেকর্ড তার (১৩২)। পেস বোলিংয়ে তার ৩৯৩ উইকেটের মতো ১৫ বার ৫ উইকেটও দেশের রেকর্ড। আছে হ্যাটট্রিকও। ব্যাট হাতেও ছিলেন বরাবরই লড়াকু। একটি সেঞ্চুরি আর ১০ ফিফটিতে রান করেছেন ৩ হাজার ২২২।
দারুণ সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারের শেষবেলায় আক্ষেপ কাঙ্ক্ষিত মাইলফলক ছুঁতে না পারায়।
“৪০০ উইকেট না হওয়ার আক্ষেপ নিয়েই যেতে হচ্ছে। ইনজুরি খুব ভোগাচ্ছে। গত এক বছরে সেভাবে ফার্স্ট ক্লাস খেলতে পারিনি। সামনেও খেলা কঠিন। সব মিলিয়েই ভাবছিলাম অবসরের কথা। আজকে সন্ধ্যায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম।”
২০ বছর খেললেও ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না তার জন্য। ক্রিকেটই যে ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান!
“ছোট থেকে ক্রিকেটই খেলেছি। ক্রিকেট খেলার মতো আনন্দ আর কিছুতে পাইনি। ঘরোয়া ক্রিকেটও আমি দারুণ উৎসাহ নিয়ে খেলেছি। প্রতিটি ম্যাচই আমার কাছে ছিল খুশির উপলক্ষ্য। কিন্তু একটা সময় তো ছাড়তেই হয়।”