আক্রান্ত একজনের সংস্পর্শে আসা ৪০ জন পর্যবেক্ষণে
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
বাংলাদেশে যে তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের একজনের সংস্পর্শে এসেছেন এমন ৪০ জনকে তাদের বাড়িতেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল হক। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ তথ্য জানান। তবে আক্রান্ত বাকি দুইজনের সংস্পর্শে আসায় কতজনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সোমবার আসাদুলকে সঙ্গে নিয়েই মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আসেন। তারা দুজনেই বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বড় ধরনের জন সমাগমের অনুষ্ঠান এড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী সনাক্ত হয়েছে বলে রোববার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ স¤প্রতি ইতালির দুটি শহর থেকে দেশে ফিরেছেন। আর তাদের একজনের সংস্পর্শে এসে পরিবারের আরেক নারী সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
তাদের সবার অবস্থাই স্থিতিশীল এবং তিনজনকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে সরকারের রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর জানিয়েছে। ওই দুইজনের সংস্পর্শে আসা আরও তিনজনকে আইসোলেশনে এবং একজনকে হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্ক রয়েছে কি না জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল হক সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, অবশ্যই আছে। এই আশঙ্কা রোধের জন্য আমরা ব্যবস্থাও করেছি। তাদের কন্ট্রাক্ট ট্র্যাকিং করে কোথায় গেছে, কাদের সঙ্গে মিশেছে, সবকিছু করে আমরা প্রথম জনের জন্য ৪০ জনকে ট্র্যাক করেছি, কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করেছি। প্রটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা হয়েছে, ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা হয়েছে।
বিমানবন্দরে হেলথ স্ক্রিনিংয়ে শিথিলতার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সচিব বলেন, এই ভাইরাসের প্রকৃতিটা একটু জানা দরকার। ভাইরাস যদি থাকে তবে সঙ্গে সঙ্গে জ্বর আসবে না, ধরা পড়বে না বা উপসর্গ দেখা দেবে না। ১৪ দিন পর্যন্ত এটা উপসর্গ দেখা নাও দিতে পারে। যখন উনি দেশে এসেছেন কোনো উপসর্গ ছিল না। এটা শনাক্ত করার কোনো ব্যবস্থা নেই।
স্ক্যানিংয়ে তার জ্বর ধরা পড়বে নাৃ তাই যে কেউ চলে আসতে পারবে। আমরা ব্যবস্থা করেছি যে, তাদের (বিদেশ ফেরতযাত্রী) একটা লোকেটর ফর্ম দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে সে কোথায় থাকবে কীভাবে থাকবে সেটা লেখা থাকবে। যদি কোনো উপসর্গ দেখা দেয় সে যোগাযোগ করবে।
এর ভিত্তিতে মোবাইল ট্র্যাক করি, কোন দেশ থেকে এল, কোথায় আছে তারাও যোগাযোগ করে হটলাইনে যে, জ্বর আসছে, কাশি হচ্ছে। এভাবে আমরা ১০০ জনের মতো লোককে টেস্ট করেছি। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আসা দুইজনের শরীরে ধরা পড়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে কি না- এ প্রশ্নে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বলেন, এভাবে আতঙ্ক ছড়ানোর কোনো যুক্তি ও ভিত্তি নেই। হাজার হাজার লোক আক্রান্ত হয়েছে, গেলেই বিপদে পড়বে এমন কিছু নয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ও গতকাল মিটিংয়ে ছিলেন। অলরেডি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা এই জিনিসগুলো লুক আফটার করে, যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।