November 26, 2024
খেলাধুলা

আইপিএলের চুক্তি হারানোর ভয়ে কোহলিদের প্রতি দুর্বল স্মিথরা

একটা সময় ছিল যখন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সামনে দাঁড়াতেই পারতো না কোনো দল। বিশেষ করে স্টিভ ওয়াহ, রিকি পন্টিং কিংবা মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ দলগুলো হারার আগেই হেরে বসতো। মাঠে প্রতিপক্ষকে সব বিভাগেই পর্যুদস্ত করে ছাড়তেন পন্টিং-লি’রা। সেই সঙ্গে ‘স্লেজিং’ তো আছেই, যা মানসিকভাবে প্রতিপক্ষকে আগেই দুর্বল করে দিতো।

কিন্তু দিন পাল্টেছে। এখন সেই ‘মহা পরাক্রমশালী’ অস্ট্রেলিয়া আর নেই। আর এর পেছনে অন্যতম কারণ ‘আইপিএল’। সোনার ডিম পাড়া এই হাঁস ভারতকে এখন ক্রিকেটের ‘সুপার পাওয়ার’ বানিয়ে দিয়েছে। আর এই অর্থের ঝনঝনানির কাছে দুর্বল হয়ে পড়েছেন এখনকার অজি ক্রিকেটাররা। তারা এমনকি স্লেজিং করতেও ভয় পান। এমনটাই মত সাবেক অজি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের।

অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্লার্কের মতে, আইপিএলের চুক্তি মানেই যেহেতু অল্প দিনেই লাখ লাখ ডলার কামাইয়ের সুযোগ, তাই এমন সুযোগ হারাতে রাজি নন অজি ক্রিকেটাররা। আর এই আইপিএল প্রতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত হয়। ফলে কোহলিবাহিনীকে বাড়তি তোয়াজ করতে গিয়ে নিজেদের আসল চরিত্র পাল্টে ফেলেছেন স্মিথ-ওয়ার্নাররা।

‘বিগ স্পোর্ট ব্রেকফাস্টকে ক্লার্ক বলেন, ‘সবাই জানে আর্থিক দিক থেকে ভারত কত শক্তিশালী। সেটা আন্তর্জাতিক হোক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেট আইপিএলে। আমি মনে করি, অস্ট্রেলিয়া, এমনকি অন্যান্য দলও কিছু সময়ের জন্য হলেও ভারতকে তোয়াজ করে। তারা কোহলি কিংবা অন্য ভারতীয় খেলোয়াড়দের তোয়াজ করে। কারণ এপ্রিলে (আইপিএলে) তাদের সঙ্গে খেলতে হয়।’

ক্লার্কের বিশ্বাস আইপিএলের নিলামে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ভূমিকার জন্যই অমন দন্তহীন হয়ে পড়ে অজিরা। কারণ কোহলি, রোহিত শর্মাদের মতো ক্রিকেটাররা আইপিএলে অধিনায়কত্ব করেন। ফলে খেলোয়াড় কেনার প্রক্রিয়ায় তাদের বড় ভূমিকা থাকে। এজন্য কোহলিদের স্লেজিং করতে ভয় পান অজি ক্রিকেটাররা। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের আইপিএলে সুযোগ পেতে কমপক্ষে ১০ জন ভারতীয় ক্রিকেটার ভূমিকা রাখেন। ফলে খেলোয়াড়রা কোহলিকে স্লেজিং করে না। বরং তারা চায় কোহলি (রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুতে তাকে সুযোগ করে দিক যাতে ছয় সপ্তাহে ১ মিলিয়ন ডলার কামানো যায়।’

বছর কয়েক আগেও ভারত আর অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি হওয়া মানেই ছিল ‘কথার লড়াই’। এমনকি খেলা মাঠে গড়ানোর আগেই শুরু হয়ে যেত এই অন্য লড়াই। ২০০৭-০৮ কিংবা ২০১৮ সালেও এটা ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এখনকার অস্ট্রেলিয়া যেন আর দশটা দলের মতোই সাধারণ। হতাশার সুরে তাই ক্লার্ক বলেন, ‘আমি মনে করি, কিছু সময়ের জন্য হলেও অস্ট্রেলিয়া দলের মানসিকতা নরম হয়েছে কিংবা আমরা যেভাবে দেখে অভ্যস্ত সেরকম আর নেই।’

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আপাতত সবধরনের ক্রিকেট স্থগিত হয়ে আছে। এর প্রভাবে পিছিয়ে গেছে আইপিএলও। কবে নাগাদ শুরু হবে সেটাও এখন অনিশ্চিত।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *