অ্যাজটেক সভ্যতার ‘মানব খুলির দুর্গে’ ১১৯ খুলি
মেক্সিকোর রাজধানী মেক্সিকো সিটির কেন্দ্রস্থলে অ্যাজটেক সভ্যতার এক ‘মানব খুলির দুর্গের’ খননকাজ শুরু করেছেন দেশটির প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
মেক্সিকোর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যান্থ্রপোলজি অ্যান্ড হিস্ট্রি (আইএনএএইচ) জানিয়েছে, দুর্গটি থেকে ১১৯টি মাথার খুলি পাওয়া গেছে।
২০১৫ সালে মেক্সিকো সিটির কেন্দ্রস্থলে একটি ভবন পুনরুদ্ধারের সময় দুর্গটি আবিষ্কার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এখান থেকে অ্যাজটেক দেবতাদের নামে এসব মানব বলি উৎসর্গ করা হতো।
‘হুয়েই টমপ্যান্টলি’ নামে পরিচিত এই দুর্গটির অবস্থান অ্যাজটেক রাজধানী টেনোকটিটলানের হুইটজিলোপোচটলি চ্যাপেলের কোনায়।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা বিভিন্ন পর্যায়ের তিনটি দুর্গ চিহ্নিত করেছেন, যা ১৪৮৬ সাল থেকে ১৫০২ সালের মধ্যে নির্মিত।
অ্যাজটেকরা নাহুয়াটল-ভাষী লোকদের একটি সম্প্রদায় ছিল যা ১৪ থেকে ১৬ শতকে মধ্য মেক্সিকোর বিশাল একটি এলাকাজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করেছিল।
১৫২১ সালে স্পেনের নাবিক হার্নান কর্টেস আক্রমণ চালিয়ে অ্যাজটেক সম্রাটকে উৎখাত করে টেনোকটিটলান দখল করে নিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, অ্যাজটেক সাম্রাজ্য ছিল সমসাময়িককালের মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে সমৃদ্ধ ও ক্ষমতাধারী শক্তি। আদিবাসী আমেরিকানদের এই সাম্রাজ্য পশ্চিমে মেক্সিকো উপত্যকা থেকে পূর্বে মেক্সিকো উপসাগর ও দক্ষিণে বর্তমান গুয়াতেমালা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
মধ্য আমেরিকার মায়া সভ্যতা থেকে প্রায় পাঁচশ মাইল পশ্চিমে অ্যাজটেকবাসীরা এক নতুন সভ্যতার উন্মেষ ঘটায়। আজকের মেক্সিকো সিটি যেখানে সেখানেই অবস্থিত প্রাচীন অ্যাজটেক সাম্রাজ্যের গোড়াপত্তন হয়।
ত্রয়োদশ শতাব্দীতে এরা মেক্সিকোর জলাশয়ের একটি দ্বীপে আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে বসত শুরু করে। তাদের প্রথম রাজার নাম টিটোন। তাদের রাজধানী ছিল টেনোকটিটলান।
অ্যাজটেকরা প্রকৃতি পূজা করত। তারা ভূমি, বৃষ্টি ও সূর্যকে দেবতা মনে করত এবং দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে মানুষ বলি দেয়া অপরিহার্য মনে করত। তারা বিশ্বাস করত সূর্যকে প্রতিদিন সন্তুষ্ট করতে না পারলে পরের দিন আর সূর্য উঠবে না। সাধারণত বলি হিসেবে কয়েদিদের ব্যবহার করা হতো এবং অ্যাজটেক যাজকরাই এ কাজ সম্পন্ন করত।