অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিক পরিচালনার অভিযোগ!
জি.এম. এমদাদ, কপিলমুনি
নিয়মনীতি উপেক্ষা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উঠেছে। ক্লিনিকের নিচে কাঁকড়ার ডিপো ও ড্রেনে নোংরা পানির অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ আর উপরে দোতালায় সাজিক্যাল ক্লিনিক অবস্থিত। এমন পরিবেশে অবস্থিত ক্লিনিকের অপারেশনের রোগীদের চিকিৎসা সেবা অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
জানাগেছে, ইতোপূর্বে এ ক্লিনিকটিতে অবহেলা ও অপচিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় একাধিকবার ক্লিনিকটি বন্ধ করেছে খুলনার সিভিল সার্জন অফিস। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর ভারতী রানী মন্ডল অবহেলা ও বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করায় ক্লিনিকটি বন্ধ করা হয়। তাছাড়া উপজেলার ক্লিনিক গুলোর বিরুদ্ধে সেবার নামে রোগীর সঙ্গে প্রতারণা ও গলাকাটা বাণিজ্যেরও অভিযোগ রয়েছে। এ ক্লিনিকে ওয়ার্ড বয় ও আয়া দিয়ে ক্লিনিক পরিচালনারও অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের মালিক তৃপ্তিরঞ্জনের মোবাইল ফোনে ফোন করে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকের মালিক তৃপ্তি রঞ্জন সেন বছরের বেশিরভাগ সময় ভারতে থাকেন বলে জানাগেছে। ভারতে তার স্ত্রী ও ছেলে থাকেন সে জন্য বেশিরভাগ সময় তিনি ভারতে অবস্থান করেন। ক্লিনিকের ওয়ার্ড বয় অমল মন্ডলের কাছে ক্লিনিকের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন মালিক তৃপ্তি রঞ্জন সেন ভারতে রয়েছেন। তিনি ও তার স্ত্রী ক্লিনিকটি দেখাশোনা করেন।
সূত্র বলছে, একটি ক্লিনিক পরিচালনার জন্য ৩ জন ডাক্তার, ৬ জন ডিপ্লোমাধারী নার্স, ২জন সুইপার থাকার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ক্লিনিকগুলোতে এসব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অধিকাংশ ক্লিনিকে আবাসিক ডাক্তার ও পর্যপ্ত নার্স না থাকলেও কাগজ কলমে দেখিয়ে দেদারছে ক্লিনিক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। ক্লিনিকের মালিকরা বিভিন্ন অপারেশনের রোগী ভর্তি করে বাইর থেকে ডাক্তার নিয়ে রোগী অপারেশন করিয়ে থাকেন।
সার্জিক্যাল ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর এক স্বজন মোঃ জাফর জানান, ক্লিনিকের নীচে একাধিক কাঁকড়ার ডিপো থাকায় সবসময় একটি গন্ধ ছড়ায়, যার ফলে এখানকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডাঃ এএসএম মারুফ হাসান জানান, ‘এ বছর থেকে ক্লিনিকে নিবন্ধন নিতে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তাছাড়া পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের নিচে কাঁকড়ার ডিপো থাকায় পরিবেশের বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।’
রোগীরা সু-চিকিৎসায় ও ভাল সেবা পাওয়ার জন্য ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়ার পরে রোগীদের দূর্বলতার সুযোগে তাদের জিম্মি করে ইচ্ছোমতো অর্থ আদায় করা হচ্ছে। সেবার নামে রোগীদের সাথে প্রতারণা করছে বলে রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ রয়েছে। ক্লিনিকগুলোতে রোগীরা যাতে সঠিক চিকিৎসা ও সেবা পায় তার জন্য স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের তদারকি কামনা করেছেন ভ‚ক্তভোগী এলাকাবাসী।