অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাকিবই সবার সেরা
তিনি সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে সাকিব আল হাসানই বাংলাদেশের এক নম্বর ক্রিকেটার। স্বাভাবিক ফর্মের সাকিব মানেই ব্যাট ও বলে দলের সেরা পারফরমার।
কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পর সেই সাকিবের দেখা মিলছে না। বোলিং যেমন-তেমন, ব্যাটিংয়ের সেই সাবলীল ধারা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে যে সাকিব ব্যাট হাতে সব দলের বোলারদের শাসন করেছেন, সেই চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডারের উইলোর ধারালো রুপ যেন কেমন ভোতা হয়ে গেছে।
তারপরও টিম বাংলাদেশের প্রধান চালিকাশক্তি এখনও সাকিব। যার সঙ্গেই খেলা থাকুক না কেন, বাংলাদেশে সম্ভাবনার কথা উঠলেই চলে আসে সাকিবের নাম। এই যে মঙ্গলবার থেকে শুরু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ, সেখানেও কিন্তু সাকিবই আশা ভরসা।
ইতিহাস-পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ব্যাট ও বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের সেরা পারফরমারই সাকিব।
বলার অপেক্ষা রাখে না, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ এখনও জিততে পারেনি অসিদের সঙ্গে। চারবার খেলে প্রতিবারই মিলেছে পরাজয়। এই ৪ ম্যাচে বাংলাদেশের সেরা পারফরমারই সাকিব। ব্যাট হাতে ৩৫.৭৫ গড়ে ৪ ইনিংসে ১৪৩ রান আর বল হাতে ৪ খেলায় উইকেট ৫টি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই ফরম্যাটে সাকিবের সেরা বোলিং ফিগার ৩/২৭। সেটাও অসিদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে টাইগার বোলারদের যে কারও সেরা ম্যাচ ফিগার। অ্যারন ফিঞ্চ, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের বিপক্ষে সাকিবের ওভারপিছু রান দেয়ার মাত্রাও কিন্তু বেশ নিয়ন্ত্রিত; ৭.৮৪।
ব্যাটিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এখন পর্যন্ত পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের একজন মাত্র ব্যাটসম্যান হাফসেঞ্চুরি করেছেন, তিনি সাকিব। আরও আশার খবর হলো, অসিদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সেই একমাত্র হাফসেঞ্চুরিটি এই শেরে বাংলায়।
দিনটি ছিল ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল। হোম অব ক্রিকেটে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জিতলেও ব্যাট হাতে ৫২ বলে ৫ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন সাকিব। এছাড়া মুশফিকুর রহিমও ৩৬ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেললে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১৫৩ রানের স্কোর দাঁড় করায়।
কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। অ্যারন ফিঞ্চ ৪৫ বলে ৭১ আর ডেভিড ওয়ার্নার ৩৫ বলে ৪৮ রানের দুটি কার্যকর ইনিংস খেললে অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেট হাতে রেখেই পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে।
অসিদের বিপক্ষে এটাই সাকিবের শেষ ভাল পারফরম্যান্স নয়। এরপর ২০১৬ সালের ২ মার্চ ব্যাঙ্গালুরুতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবের দুর্দান্ত অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রায় সমান তালে লড়ে ৩ উইকেটে হার মানে টাইগাররা।
সাকিব সে ম্যাচে ব্যাট ও বল হাতে ছিলেন সমান উজ্জ্বল। প্রথমে ব্যাট হাতে ২৫ বলে খেলেন ৩৩ রানের ইনিংস। তারপর বল হাতে ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২৯ বলে ৪৯ আর সাকিবের ৩৩ রানে ভর করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ ১৫৬ রানের স্কোর দাড় করায়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।
এখন দেখা যাক, চিরচেনা শেরে বাংলায় এবার পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে কী করেন সাকিব? এ সিরিজ দিয়েই কি আবার নিজেকে খুঁজে পান কি না সেটাই দেখার?