January 9, 2025
জাতীয়

অরিত্রীর আত্মহত্যা: ভিকারুননিসার ২ শিক্ষকের বিচার শুরুর আদেশ

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষক নাজনীন আক্তার ও জিনাত আরার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।

গতকাল বুধবার দুই শিক্ষকের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এই মামলায় অভিযোগ গঠনের পর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম আগামি ২৭ অক্টোবর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন রাখেন। জামিনে থাকা ভিকারুননিসার দুই শিক্ষক এদিন কাঠগড়ায় ছিলেন। বিচারক তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনালে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার চান। এ মামলায় অভিযোগ গঠন দুই দফা পেছানো হয়। গত ১৬ জুন একই বিচারক ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের দিন রেখেছিলেন। ওইদিন দিন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন আসামি নাজনীন ফেরদৌস ও জিনাত আরা।

নাজনীন ছিলেন ভিকারুননিসার প্রধান ক্যাম্পাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক; বেইলি রোডের ওই শাখার প্রভাতি শাখার প্রধান ছিলেন জিনাত। মামলাটিতে আসামি ছিলেন অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাও। তবে অভিযোগপত্রে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী (১৫)। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী। এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিনই আত্মহত্যা করেন অরিত্রী। অরিত্রীর আত্মহত্যার পর তার সহপাঠিদের বিক্ষোভে নামে, ৪ ডিসেম্বর তার বাবা দিলীপ অধিকারী আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করেন। ওই মামলায় অরিত্রীর শিক্ষকদের পুলিশ গ্রেফতারও করলেও পরে তারা জামিন পান। গত ২৮ মার্চ নাজনীন ও জিনাতকে আসামি করে মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কামরুল হাসান তালুকদার। আসামিদের বিরুদ্ধে দÐবিধির ৩০৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এই ধারায় মৃত্যুদÐ, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা ১০ বছর কারাদÐের বিধান রয়েছে। গতকাল বুধবার আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সাবিনা আক্তার দীপা বলেন, দুই শিক্ষকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আসামিদের পক্ষ নিয়ে আদালতে বলেন, শিক্ষকদের কারণে নয়, মেয়েটি আতœহত্যা করেছে বাবা-মায়ের বিভিন্ন কথাবার্তায় শোকাহত হয়ে। যদি শিক্ষকদের বকাঝকার কারণে আত্মহত্যা করত তবে স্কুলেই সে আত্মহত্যা করত। এ সময় অভিযোগ গঠনের পক্ষে বাদী অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী তার আইনজীবীদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে বলেন, এ কথার মোক্ষম উত্তর দেওয়ার জন্য এখন দেখছি আমাকেই শুনানি করতে হবে। উভয়পক্ষে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো শুনানি চলার পর আদেশ দেন বিচারক। এদিন শুনানিতে রাষ্ট্র এবং বাদীপক্ষে ৪-৫ জন এবং আসামির পক্ষে ৮-১০ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *