অরিত্রীর আত্মহত্যা: দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ ৩০ এপ্রিল
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য ৩০ এপ্রিল দিন রেখেছে আদালত। গতকাল বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী মামলার বাদীকে ওই দিন আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস জারি করে তার উপস্থিতিতে অভিযোগপত্র গ্রহণের এই তারিখ ঠিক করে দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী কামরুল ইসলাম গত ২৮ মার্চ আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস এবং প্রভাতী শাখার প্রধান শিক্ষক জিনাত আরাকে সেখানে আসামি করা হয়।
তবে অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় এজাহারের আরেক আসামি অরিত্রীর শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকে এ মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।
গতবছর ৩ ডিসেম্বর শান্তিনগরের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী। তার আগের দিন পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগে তাকে পরীক্ষা হল থেকে বের করে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল নিয়ে টেবিলে রেখে লিখছিল। অন্যদিকে স্বজনদের দাবি, নকল করেনি অরিত্রী। এরপর অরিত্রীর বাবা-মাকে ডেকে নেওয়া হয় স্কুলে। তখন অরিত্রীর সামনে তার বাবা-মাকে অপমান করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
অরিত্রীর স্বজনরা বলছেন, বাবা-মার ‘অপমান সইতে না পেরে’ ঘরে ফিরে আত্মহত্যা করে এই কিশোরী। তবে অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস শিক্ষার্থী অরিত্রীর অভিভাবকদের অপমান করার কথা অস্বীকার করে আসছেন।
অরিত্রীর আত্মহত্যায় ঘটনায় তার বাবা দিলীপ অধিকারী গত ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় দণ্ডবিধির ৩০৫ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। নাজনীন ফেরদৌস, জিনাত আরা ও হাসনা হেনাকে আসামি করা হয় সেখানে।
মামলা দায়েরের পরদিন শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ৯ ডিসেম্বর জামিন পান হাসনা হেনা।
আর নাজনীন ও জিনাত গত ১৯ জানুয়ারি ঢাকার হাকিম আবেদনে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। অরিত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় রাজধানীর বেইলি রোডের নামি এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা টানা কয়েক দিন স্কুলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তদন্তে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ জন্য ওই তিন শিক্ষককে চিহ্নিত করা হলে তাদের বরখাস্ত ও এমপিও বাতিল করা হয়।