September 29, 2024
জাতীয়

অমিত শাহকে সমর্থন করে দেশের ক্ষতি করছেন কাদের : ফখরুল

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

ভারতে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বক্তব্যকে সমর্থন করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশের ক্ষতি করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের বক্তব্যের জবাব দিতে বৃহস্পতিবার ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি। ভারত নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের হিন্দুসহ কয়েকটি ধর্মালম্বীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এই সংশোধনের কারণ ব্যাখ্যা করে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে হিন্দুরা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

বিএনপি তার প্রতিবাদ জানানোর পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের বিষয়টি তুলে ধরে বলেছিলেন, ওই অবস্থায় মাইনরিটিদের দেশ থেকে পলায়ন করাটাই ছিল স্বাভাবিক।

ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখÐতা, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সুস্পষ্ট হুমকি স্বরূপ রাখা অমিত শাহর পক্ষে অবস্থান নিতে গিয়ে সমগ্র জাতিকে (কাদের) স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ করেছেন।

ওবায়দুল কাদেরের সা¤প্রতিক বক্তব্য সর্ম্পূণ রূপে ভারত তোষণ নীতির এক ঘৃণ্য আখ্যান মাত্র। এর মাধ্যমে তিনি সুস্পষ্টভাবে বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেশপ্রেম বিবর্জিত প্রতিহিংসার রাজনীতি চরিতার্থ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য কোনো বিচারেই বাংলাদশের মানুষ গ্রহণ বা সর্মথন করতে পারে না।

জনাব অমিত শাহ প্রদত্ত বিএনপি ও বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্যকে নিরঙ্কুশভাবে সমর্থন করে ওবায়দুল কাদের ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জনাব রবীশ কুমারের বর্ধিত দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র। বিএনপি আমলে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনা ঘটেনি বলেও দাবি করেন ফখরুল।

তিনি পাল্টা বলেন, শেখ হাসিনার ১৯৯৬-২০০১ এবং ২০০৯-২০১৯ সময়কালে রামু, নাসিরনগর, নাটোরের বড়াইগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, যশোরের মালোপাড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সকল ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিটির সাথেই আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা বহুলভাবে প্রচারিত। এমনকি গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের বহু এমপি-মন্ত্রীদের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যারা বিভিন্নভাবে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করেছে।

ভারতের নাগরিকপঞ্জিতে বাদপড়াদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর শঙ্কার মধ্যে তা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। মোমেন বলেছেন, ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি থাকলে তাদের ফেরৎ আনা হবে।

ফখরুল বলেন, অর্থাৎ উনারা স্বীকার করে নিচ্ছেন যে এখানে পুশ ইন হচ্ছে এবং তারা আগে থেকে বলছেন যে আমরা নিয়ে নেব। এটা কি ডাম্পিং গ্রাউন্ড?

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ সন্নিহিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের ১৯ লাখ নাগরিককে এনআরসির মাধ্যমে নাগরিকহীন ঘোষণা করা হয়েছে। একথা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলা যায়, ভারতের নাগরিক সংশোধনী আইন ও নাগরিকপঞ্জির মাধ্যমে অবধারিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, শহীদুল ইসলাম বাবুল উপস্থিত ছিলেন।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *