অভয়নগরে মুক্তিপন না পেয়ে কলেজছাত্রকে খুন ; আটক ২
মল্লিক খলিলুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি
যশোরের অভয়নগরে দুই চাঁদাবাজ মুক্তিপনের ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে নুরুজ্জামান বাবু (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রকে খুন করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পুড়াখালী বাওড় থেকে ওই ছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাÐের সাথে জড়িত দুই চাঁদাকাজকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। নিহত নুরুজ্জামান বাবু উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের পুড়াখালী গ্রামের ফকিরবাগান এলাকার ইমরান শেখের ছেলে। সে ধোপাদী এস এস কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।
হত্যাকাÐের ব্যাপারে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম জানান, গত ২ জুন মঙ্গলবার নিহতের বাবা বাদি হয়ে থানায় ছেলে নিখোঁজের একটি সাধারন ডাইরি করেন। জিডির ভিত্তিতে ওই দিন রাতে পুড়াখালী গ্রামের সরোয়ার খন্দকার মুরাদের ছেলে নিহতের বন্ধু রিফাত হোসেন আউসকে (১৯) আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যাকাÐের মুলহোতা ওয়াদুদ পাটোয়ারীর ছেলে রাজ্জাককে (৫৫) ৩ জুন বুধবার ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানার রাজাপুর গ্রাম থেকে আটক করা হয়। আটক দুইজনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দুপুরে পুড়াখালী বাওড়ের পূর্ব পাড়ে কচুড়িপানার মধ্য থেকে নুরুজ্জামান বাবুর লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক রাজ্জাক ও আউস কলেজ ছাত্র নুরুজ্জামান বাবু হত্যাকাÐের কথা স্বীকার করেছেন। আটক দুইজনকে আসামি করে হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
কিভাবে হত্যাকাÐ সংগঠিত হয়েছে এ ব্যাপারে আটক দুইজনের স্বীকারোক্তির বর্ণনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, কলেজ ছাত্র বাবুর বাবা একজন সফল ব্যবসায়ী। অনেক অর্থের মালিক। বাবুকে অপহরণ করলে মুক্তিপন হিসেবে অনেক টাকা পাওয়া যাবে। এমন চিন্তায় অপহরণ ও মুক্তিপনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় আউস ও রাজ্জাক। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১ জুন সোমবার রাতে আউস তার বন্ধু বাবুকে বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে বাওড়ের পাঁড়ে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা মোতাবেক ঘুমের ওষুধ মেশানো কোমল পানীয় পান কারায় রাজ্জাক। কিছুক্ষন পর বাবু ঘুমিয়ে পড়লে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টার সময় তারা দুইজনে মিলে গলায় ফাঁস দিয়ে বাবুকে হত্যা করে। এরপর হাত-পা বেঁধে বাঁওড়ের কচুরিপানার মধ্যে লাশ লুকিয়ে রাখে। সেখানে বসেই তারা বাবুর বাবার নিকট ছেলের মুক্তির জন্য ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় তার ছেলেক হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়।
নিহতের বাবা ইমরান গাজী বলেন, দুই মেয়ে ও একমাত্র ছেলে নুরুজ্জামান বাবু। আমার ছেলেকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে। ছেলেকে আর ফিরে পাবো না। এ সময় তিনি অঝরে কেঁেদ ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলেন, আমার ছেলে হত্যার বিচার হিসেবে আমি খুনিদের ফাঁসি দাবি করছি।