January 21, 2025
আঞ্চলিক

অভয়নগরের ভবদহের হাজার হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ হচ্ছে না

মল্লিক খলিলুর রহমান, অভয়নগর

যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন বিলে এবছর দু:খখ্যাত ভবদহের হাজার হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ হচ্ছেনা। বিলের পানি নিস্কাশন না করায় হাজার হাজার বিঘা জমিতে থৈ থৈ করছে পানি। বিলের যে সমস্ত মৎস্য ঘেরে বোরো ধান চাষ হয়ে থাকে সে গুলিতে পানি থাকায় ধান চাষ করতে পারছেনা স্থানীয় কৃষকরা।

সরোজমিনে দেখা গেছে, অভয়নগর উপজেলার ঝিকরার, ধনিয়ার, সুন্দলীর পূর্ব, সুড়িরডাঙ্গা, ধোপাদীর, ডুমুরতলার ও মনিরামপুরের ডুমুর, বোকড় বিল সহ উপজেলার বিভিন্ন বিল এখনও থৈ থৈ করছে পানি। আবার বিলগুলোর মধ্যে সরু সরু বাধ দিয়ে পাড় বেধে তৈরী হয়েছে মৎস্য ঘের।

এলাকার কৃষকরা জানান, বিলের মৎস্য ঘেরের অধিকাংশ জমির মালিকদের সাথে চুক্তি থাকে মাছ চাষ শেষে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঘেরের পানি সেচ দিয়ে বোরো আবাদের পরিবেশ করে দিতে হবে। কিন্তু এবছর তা মোটেও হচ্ছেনা। আবার এদিকে আমডাঙ্গা খাল দিয়ে পানি প্রবাহ বাড়াতে ভবদহ ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির উদ্দ্যোগে খালের পানি অপসারণ ও খাল প্রশস্ত করণের কাজ চলছে। কিন্তু বিএডিসির অর্থায়নে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করে আমডাঙ্গা খাল কাটা হয় এবং খালের উপর পুনরায় ব্রিজটি ভেঙে দিয়ে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুন ব্রিজ তৈরি করা হয়। সরকারের ঐ অর্থ এখন কৃষকের কোন কাজে আসছেনা। এলাকার বিভিন্ন ঘের ব্যাবসায়ীরা জানান, তাদের ঘের পানিতে ভরে গেছে। পানি সরাতে না পারায় এবছর ঘেরে ধান চাষ করাও সম্ভব হবে না। আবার মাছ চাষ করাও সম্ভব হচ্ছে না। এই সময় আমরা ঘের থেকে পানি সেচ দিয়ে ঘেরের মধ্যে বোরো ধান চাষ করতাম। কিন্তু এবছর ধান চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তারা আরও জানান, এবার বিলে ধান হবে না তাই মনে করে ছিলাম ঘের পানিতে ভরে গেছে এবার আমরা মাছ চাষ করব কিন্তু তারও কোন উপায় নেই। কারণ ঘেরে যে পরিমাণ পানি রয়েছে তার মধ্যে মাছ ছাড়লে যদি নতুন করে পানির চাপ দেয় কিংবা বৃষ্টি হয় আমাদের একুল ওকুল দু’টোই যাবে। এখন উভয় সংকট অবস্থা চলছে এরকম অবস্থায় থাকলে এলাকার সাধারণ মধ্যবিত্তদের অনাহারে দিন কাটাবে। এলাকার প্রধান ফসল বোরো যে সঠিক ভাবে না করতে পারলে  কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিল ঝিকরার পাড়ের রাজাপুর, গোবিন্দপুর এলাকার কৃষকেরা নিজেদের অর্থায়নে পানি সেচ করে বোরো ধান আবাদ করে থাকে। কিন্তু এবছর পানির চাপ এত বেশী যে, পানিসেচ করতে যে পরিমাণ খরচ হবে তা বোরো আবাদ করে পুষিয়ে উঠা যাবেনা বলে এবছর পানি সেচ করতে আগ্রহী হচ্ছেনা এলাকার কৃষকেরা।

অভয়নগর উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও ভবদহ পানি নিস্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহŸাায়ক এনামুল বাবুল ফরাজী বলেন, ভবদহ বিলের পানি নিস্কাশনের জন্য আমডাঙ্গা খাল খননের কাজ দ্রæত এগিয়ে চলছে। বিলের পানি দ্রæত সরাতে পারলে বোরো চাষিরা ধান রোপন করতে পারবে। এবছর বিলে পানি বেশি থাকায় অনেক জামিতে বোরো ধান চাষ করা সম্ভাব না ও হতে পারে। তিনি আরও বলেন স্থায়ী সমাধানের জন্য ভবদহে দ্রæত সময়ের মধ্যে টিআরএম প্রকল্প চালু করা হবে।

এ বিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সামধনী বলেন, ইতোপূর্বে আমরা কৃষকদের অনুপ্রাণিত করেছি বিলের পানি সরানোর জন্য। আমাদের কাছে প্রযাপ্ত পরিমানে বোরো ধানের চারা আছে। বোরো মৌসুমের শেষেও যদি পানি কমাতে পারে বা পানি কমে যায় তাহলে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বোরো ধানের চারা চাষিদের মাঝে সরবরাহ করতে পারবো।

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *