অবৈধ সম্পদ: কাউন্সিলর সাঈদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নয় নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে সাড়ে চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ কমিশনের সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান এ মামলা করেন বলে সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
মামলায় বলা হয়েছে, সাঈদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্যাসিনো পরিচালনাসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসংগতিপূর্ণ চার কোটি ৪৭ লাখ ৬৬ হাজার ২৬১ টাকা অর্জন করে নিজের দখলে রেখেছেন। এই কারণে মামলায় সাঈদের বিরুদ্ধে দুদক আইন-২০০৪ এর ২৭(২) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন-১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, ‘আসামি মমিনুল হক সাঈদ প্রকৃতপক্ষে ক্যাসিনো ব্যবসাসহ বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় নামে বেনামে দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ অর্জন করেছেন। ‘উক্ত সম্পদ সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ প্রক্রিয়া জটিল ও সময় সাপেক্ষ বিধায় তদন্তকালে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আওতায় তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে’।
সাঈদ তার স্ত্রী, সন্তান বা তার সংশ্লিষ্ট অন্য কারও নামে আরও সম্পদ অর্জন করেছেন কিনা সে বিষয়েও তথ্য পাওয়া গেলে তা আমলে নেওয়া হবে বলেও মামলায় বলা হয়েছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ফকিরাপুলের ক্রীড়া ক্লাবগুলোতে র্যাবের অভিযানে ক্যাসিনো চালানোর বিষয়টি ধরা পড়লে আলোচনায় আসে কাউন্সিলর সাঈদের নাম। পরে তাকে কাউন্সিলর পদ থেকে অপসারণ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
প্রথমেই যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে যায় র্যাব। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, মদ, বিয়ার ও নগদ ২৪ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। পাশাপাশি ১৪২ জনকে আটকে সাজা দেয় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এরপর পাশের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে র্যাবের অভিযানে নগদ ২০ লাখ ২৭ হাজার টাকা, জুয়ার সরঞ্জাম, ২০ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোট, বিপুল পরিমাণ মদ ও মাদক জব্দ করা হয়।
ওই দিন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোলা মো. কাওসারের সঙ্গে ওই এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মমিনুল হক সাইদ এই ক্লাবটি চালাতেন।
এছাড়া আরামবাগ ক্রীড়া সংঘেরও পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাউন্সিলর সাঈদ। এই ক্লাবেও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
অবৈধভাবে ক্যাসিনো পরিচালনায় এরইমধ্যে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুবলীগের পদ থেকেও তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।