November 23, 2024
আঞ্চলিকলেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

অবশেষে অভিভাবক পাচ্ছে খুলনা জেলা যুবলীগ, শীঘ্রই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

জয়নাল ফরাজী
অবশেষে দীর্ঘদিনের ভঙ্গুর দশা থেকে মুক্ত হচ্ছে খুলনা জেলা যুবলীগ। শীঘ্রই পুরাতন-নতুনদের সমন্বয়ে কেন্দ্র থেকে আহ্বায়ক কমিটি করার আশ্বাস মিলেছে। এতে করে দীর্ঘদিনের অভিভাবক না থাকার অভাব পূরণ হচ্ছে সরকার দলীয় যুব সংগঠনটির। সম্প্রতি খুলনা জেলা যুবলীগের একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও বিসিবি পরিচালক শেখ সোহেল এর সাথে সাক্ষাতের পর এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ২৫ মে খুলনা জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সম্মেলনে কামরুজ্জামান জামাল সভাপতি ও আকতারুজ্জামান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর এই দুই নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ফলে নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে জেলা যুবলীগ। দীর্ঘ ৫ বছর বছর ধরে অভিভাবক ছাড়াই চলছে সংগঠনটি। ওই কমিটির সহ-সভাপতি জিয়া হাসান তুহিন, যুগ্ম সম্পাদক সরদার জাকির হোসেন ও অজিত বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক এবিএম কামরুজ্জামান, দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রিয়াজ, প্রচার সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জলিল তালুকদার, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জামিল খানসহ হাতে গোনা কয়েকজন নেতাই এখন এ সংগঠনটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। এছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ মো. আবু হানিফ, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা চৌধুরী রায়হান ফরিদসহ সাবেক একাধিক ছাত্রনেতা নেতৃত্ব প্রত্যাশী থাকলেও কমিটি গঠন না হওয়ায় তারা রয়েছেন পদ বঞ্চিত। ফলে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়েও অভিভাবকের অভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
একাধিক সূত্র জানায়, গত ১৪ অক্টোবর যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সাথে সাক্ষাৎ করেন জেলা যুবলীগের প্রতিনিধি দল। ওই সময় উপজেলাসহ জেলা যুবলীগের কাউন্সিলর তালিকা ও যাবতীয় নথিপত্র হস্তান্তর করা হয় কেন্দ্রের কাছে। নেতৃবৃন্দ এসময় পুরাতন ও নতুনদের সমন্বয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি করার দাবি করেন। প্রতিনিধি দলের কথা শুনে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জানান- শীঘ্রই কেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার পর খুলনা সফরে আসার আগ্রহ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ঝিমিয়ে পড়া সংগঠনটিতে চাঙ্গা করতে আপাতত আহ্বায়ক কমিটি করার ব্যাপারে আশ্বাস প্রদান করেন তিনি। ওই আহ্বায়ক কমিটি উপজেলার সম্মেলন সম্পন্ন করার পরে বর্ণাঢ্য ভাবে জেলার সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এর একদিন পর ১৫ অক্টোবর জেলা যুবলীগের প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেন বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র বিসিবি পরিচালক শেখ সোহেল এর সাথে। এসময় নেতৃবৃন্দ জেলা যুবলীগের কমিটি করার ব্যাপারে তাঁর সহযোগিতা কামনা করেন। শেখ সোহেল নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন- অত্যন্ত বিনয়ী, ক্লিন ইমেজের তারুণ্যদীপ্তদের সমন্বয়ে যুবলীগের কমিটি করা হবে। যাদের কমিটিতে আনা হবে, তাদের ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। বিতর্কিতদের বাদ দিয়েই কমিটি করা হবে। এছাড়া যাদের বয়স ৪৫ এর বেশি তাদের যুবলীগের কমিটিতে আনার পরিকল্পনা নেই।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিয়াজ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, ‘জেলা যুবলীগের ভঙ্গুর দশা থেকে বাঁচানোর জন্য বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র ও অত্র অঞ্চলের যুব সমাজের আশা-ভরসার কেন্দ্রস্থল শেখ সোহেল এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশনায় জেলা যুবলীগ একটি মডেল ইউনিটে পরিণত হবে এটাই আমার প্রত্যাশা।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা যুবলীগের নেতৃত্ব শূন্য হওয়ার পর আমরা কয়েকজন সংগঠনটির হাল ধরে রেখেছি। উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দও আমাদের পাশে থেকেছেন। এখন কমিটি হলে দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিতরা থাকবে এটা কামনা করি। নগর যুবলীগের আহ্বায়ক সফিকুর রহমান পলাশ ও যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজনের ন্যায় আমরাও জেলা যুবলীগকে মডেলে পরিণত করতে চাই।’
খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা যুবলীগের নেতৃত্ব প্রত্যাশী শেখ মো. আবু হানিফ দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্লিন ইমেজ দেখে কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেছেন। আমি আশা করি তারা সবকিছু যাচাই বাছাই করে এবং খুলনার আওয়ামী রাজনীতির অভিভাবক শেখ পরিবারের সাথে পরামর্শ করে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সাংগঠনিক অবস্থান বিবেচনা করে মেধাবী-তারুণ্যদীপ্তদের নিয়ে কমিটি গঠন করবেন। দীর্ঘদিন ধরে সম্মেলনের অভাবে অনেক সাবেক ছাত্রনেতা পদবঞ্চিত রয়েছেন, তাদেরকে কমিটিতে অগ্রাধিকার দিয়ে কমিটি করা হবে বলে প্রত্যাশা করি।’
প্রসঙ্গত, জেলা যুবলীগের স্থবিরতা কাটাতে এর আগে ২০১৮ সালে সংগঠনের সভাপতি কামরুজ্জামান জামাল ও সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু সম্মেলন করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেন। ওই সময় ৯ উপজেলার কাউন্সিলরসহ জেলা’র কাউন্সিলরদের তালিকা তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তর করেন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হলেও পরবর্তীতে অনিবার্য কারণে আর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি।

দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *