অফসাইড নির্ধারণে ‘লিম্ব-ট্র্যাকিং’ প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে ফিফা
খেলার মাঠে ফুটবলারদের হাত-পা’র উপর নজর রাখার প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে ফিফা। খেলোয়াররা অফসাইডে ছিলেন কি না, সেটি নির্ধারণ আরও সহজ করতেই এই প্রযুক্তি। কার্যকর প্রমাণিত হলে ২০২২ সালের ওয়ার্ল্ডকাপে ব্যবহৃত হতে পারে ফিফার ‘লিম্ব-ট্র্যাকিং’ প্রযুক্তি।
৩০ নভেম্বর কাতারে শুরু হচ্ছে ‘অ্যারাব কাপ ২০২১’। এই প্রতিযোগিতাতেই ‘সেমি-অটোমেটিক অফসাইড টেকনোলজি’ নিয়ে পরীক্ষা চালাবে ফিফা। ২০২২ সালের ওয়ার্ল্ডকাপের আয়োজকও কাতার। এই প্রযুক্তির মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে স্টেডিয়ামের ছাদে বসানো ক্যামেরা। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ বলছে, ভিডিও ফিড থেকে ফুটবলারদের হাত-পা’র অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য সরাসরি যাবে ম্যাচ কর্মকর্তাদের কাছে। সেই তথ্য দেখে মাঠের খেলোয়ারদের কেউ অফসাইডে ছিলেন কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে তৎক্ষণাত।
বিবিসি’র প্রতিবেদন বলছে, ১০ থেকে ১২টি ক্যামেরা মিলে প্রতি সেকেন্ডে ৫০ বার প্রতি খেলায়ারের সর্বোচ্চ ২৯টি ডেটা পয়েন্ট সংগ্রহ করবে।
ফুটবলের মাঠে কোনো খেলোয়ারের কাছে বল পাস করার সময় ওই খেলোয়ার ও গোল লাইনের মাঝে বিপরীত দলের গোলকিপারসহ দুইজনের কম প্রতিদ্বন্দ্বী খেলোয়ার থাকলে অফসাইড হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। ফুটবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়মগুলোর একটি এটি; অফসাইডের জেরে গোল বাতিল হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে বিতর্ক থেকে শুরু করে মাঠে অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিয়েছে এই নিয়মটি।
অফসাইড প্রসঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বিপাকে পড়েন মাঠের রেফারিরাও। অফসাইড বিতর্কে আরও রশদ জুগিয়েছে ‘ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি’ বা ভিএআর প্রযুক্তি।
ভিএআর প্রযুক্তির বড় সীমবদ্ধতা হচ্ছে, খেলোয়ারের পা থেকে ঠিক কখন বল বের হয়ে যাচ্ছে সেই মুহূর্তটি নির্ধারণরে জন্য যে রেজুলিউশন বা ফ্রেমরেট প্রয়োজন তা সবসময় মেলে না ভিডিও ফুটেজ থেকে। ভিডিও ফিড বিশ্লেষণ করে আর পিচে লাইন টেনে খেলোয়াররা অফসাইডে কি না সেটি নির্ধারণ করার চেষ্টা করে ভিএআর প্রযুক্তি।
এক্ষেত্রে গোলের পর সেটি অফসাইডের বিবেচনায় বাতিল হলেও সেটি জানতে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় মাঠের সবাইকে।
“ফুটবলের উপর ভিএআর প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে, বিভিন্ন বড় ভুলও কমিয়ে এনেছে এই প্রযুক্তি। কিন্তু সবসময়ই আরও উন্নতির জায়গা থাকবে– এবং অফসাইড তার মধ্যে একটি।”– বিবিসি’র কাছে এই মন্তব্য করেছেন ফিফা’র চিফ রেফারিং অফিসার পিয়েরলুইজি কলিনা।
“অফসাইড নির্ধারণের প্রক্রিয়া যে বেশি সময় নেয় সেটি জানি আমরা। লাইনের অবস্থান যে ১০০ ভাগ সঠিক নাও হতে পারে, সেটাও জানি আমরা।”–যোগ করেন তিনি।
বিবিসি’র প্রতিবেদন বলছে, অ্যারাব কাপে এই প্রযুক্তির প্রয়োগ থেকে সাফল্য পেলে ২০২২ সালের ওয়ার্ল্ড কাপেরও ব্যবহৃত হতে পারে এটি।