অনেক বড় মনের মানুষ ছিলেন ডিন জোনস
হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন সাবেক অজি ব্যাটসম্যান ও জনপ্রিয় ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার ডিন জোনস। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটকে ফের ‘গ্রেট টিম’ বানানোর অন্যতম কারিগর এই কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ক্রিকেটাঙ্গনে।
ক্রিকেট থেকে অবসরের পর ধারাভাষ্যে জনপ্রিয়তা পাওয়া এই তারকা দেশ-বিদেশে কমেন্ট্রি করে বেড়াতেন। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আইপিএলের হোস্ট ব্রডকাস্টার হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) হোটেলের লবিতে হাঁটার সময় তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
জোনসের মৃত্যুর পর তার বিভিন্ন ছবি ও ধারাভাষ্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) দায়িত্বপালনকালে তার একটি স্ক্রিনশট বেশ সাড়া ফেলেছে। ওই স্ক্রিনশটটি প্রকাশ করেছেন পিএসএল’র ফ্র্যাঞ্চাইজি ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের জেনারেল ম্যানেজার রেহান-উল-হক।
পাকিস্তানি ক্রিকেটার আসিফ আলীর ক্যান্সার আক্রান্ত কন্যার চিকিৎসার্থে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে একটি ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের কোচ হিসেবে কাজ করা জোনস। তার দলেরই খেলোয়াড় ছিলেন আসিফ। সেই ম্যাসেজ থেকে এটা স্পষ্ট মাঠের বাইরেও বড় মনের মানুষ ছিলেন সাবেক অজি কিংবদন্তি।
ডিন জোনসের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর স্ক্রিনশটটি শেয়ার করে রেহান লিখেছেন, ‘আমি সাধারণত কোনো কথাবার্তার স্ক্রিনশট শেয়ার করি না, কিন্তু আমার মনে হয় মাঠের বাইরে ডিন জোনস কেমন মানুষ ছিলেন তা সবার জানা দরকার। তিনি একজন পরদুঃখকাতর মানুষ ছিলেন। আসিফ যখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি আমাকে এটা পাঠিয়েছিলেন। তিনি আসিফের ওপর বিশ্বাস রেখেছিলেন এবং আসিফ তার প্রতিদানও দিয়েছে সেবার। ’
রেহানের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে ডিন জোনস বলেন, ‘আমি ভাবছিলাম আসিফ এবং তার পরিবারের জন্য কিছু অর্থ সংগ্রহ করা দরকার। (দলের) সব ছেলেদের কাছ থেকে অর্থসাহায্য নেওয়া দরকার, যাতে সে (আসিফের মেয়ের চিকিৎসা) খরচ কুলিয়ে উঠতে পারে। ’
জোনস যে শুধু ম্যাসেজ পাঠিয়েই ক্ষান্ত হয়েছিলেন তা কিন্তু নয়। ২০১৯ সালের মার্চে পিসিএলের এক ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসিফ আলীর কন্যার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। সেবার তার দল ইসলামাবাদের ব্যাটসম্যান আসিফ আলী কন্যার ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার দুঃখ বুকে চেপেই ১০ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতান আসিফ।
২০১৯ বিশ্বকাপের আগে মেয়েকে ক্যান্সারের মতো কঠিন লড়াইয়ে রেখে ইংল্যান্ডে খেলতে গিয়েছিলেন আসিফ। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো- সেখানে থেকেই দুই বছর বয়সী কন্যা নূর ফাতিমার মৃত্যু সংবাদ শুনতে হয় তাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেলেও আর ফেরা হয়নি আসিফ কন্যার।