অনেকবার বলার পরেও নুসরাত বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করেনি : নিখিল
ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে কলকাতার অভিনেত্রী নুসরাত জাহানের বিচ্ছেদ নিয়ে ব্যাপক জলঘোলা হচ্ছে। একবার নুসরাত বিবৃতি দিয়ে নিখিলকে দোষারোপ করছেন, আবার নিখিল পাল্টা বিবৃতিতে নুসরাতকে দায়ী করছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এমনই এক বিবৃতিতে নিখিল বলেছেন, ‘বিয়ে নিয়ে আমার পরিবার এবং আমাকে যে দোষারোপ করা হচ্ছে, তার সত্যতা প্রকাশ করতেই এই বিবৃতি।’
নিখিল সেখানে বলেছেন-
১. আমি নুসরাতের প্রেমে পড়েছিলাম। বিয়ের প্রস্তাবও আমিই দিই এবং সে তা খুশি মনে গ্রহণ করে। আমরা পরিকল্পনা করি বিদেশে গিয়ে বিয়ে করার। সে অনুযায়ী ২০১৯ সালে তুরস্কে আমাদের বিয়ে হয় এবং বৌভাত হয় কলকাতায়।
২. আমরা স্বামী-স্ত্রীর মতোই থাকতাম। সমাজ সেই চোখেই আমাদের দেখেছিল। একজন দায়িত্ববান মানুষ এবং স্বামী হিসেবে যা করার আমি তাই করেছি। আমাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব সকলেই জানে আমি নুসরাতের জন্য কী কী করেছি। ও যা করত, তাতেই আমার সমর্থন ছিল। কোনো দিন কোনো ধরনের শর্ত ওর ওপর চাপাইনি। কিন্তু খুব কম সময়ের মধ্যেই নুসরাত বদলে যায়। আমাদের দাম্পত্যেও কিছুটা ছেদ পড়ে।
৩. আমি বুঝতে পারি, ২০২০ সালের আগস্ট মাসে একটা সিনেমার জন্য শ্যুট করতে গিয়েই আমার প্রতি আমার স্ত্রীর আচরণ সম্পূর্ণ বদলে যেতে শুরু করে। কেন, তার সব চেয়ে ভালো উত্তর ওর কাছেই আছে।
৪. আমরা যখন একসঙ্গে থাকতাম, নুসরাতকে বারবার বলতাম আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করে নিতে। প্রত্যেকবার দেখেছি ও সেটা এড়িয়ে যেত।
৫. ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর ও আমাকে ছেড়ে চলে যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় ওর ব্যবহৃত সমস্ত মূল্যবান জিনিসপত্র, কাগজ এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি। ও বালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করে। তার পরে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমরা আর কোনোদিন একসঙ্গে থাকিনি। ওর ফেলে যাওয়া যাবতীয় জিনিসপত্র এবং আয়কর সম্পর্কিত নথি সব কিছুই কয়েকদিনের মধ্যে ওর ফ্ল্যাটে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
৬. সংবাদমাধ্যমে এখন দেখছি, ওর চলে যাওয়া এবং আমাদের সম্পর্ক, প্রতারণা, সব বিষয়ে একের পর এক খবর। খুব খারাপ লাগা থেকেই থাকতে না পেরে ৮ মার্চ, ২০২১-এ আমি ওর বিরুদ্ধে আলিপুর আদালতে সিভিল স্যুট (দেওয়ানি মামলা) দায়ের করি।
৭. যেহেতু আমাদের সম্পর্কের বিষয় এখন আদালতে বিচারাধীন, ফলে আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে পারব না। আমি করতে চাইওনি। কিন্তু ওর গতকালের বিবৃতি আমাকে বাধ্য করেছে সত্যকে প্রকাশ করতে।
৮. আমাদের বিয়ের পর দেখেছিলাম নুসরাতের ওপর মোটা অঙ্কের গৃহঋণের বোঝা। ওই সমপরিমাণ অর্থ আমি আমার পারিবারিক অ্যাকাউন্ট থেকে ওর অ্যাকাউন্টে দিয়ে দিই। আমার এটাই ধারণা ছিল যে মাসিক কিস্তির মাধ্যমে ও সেই টাকা আমাদের পারিবারিক অ্যাকাউন্টে ফিরিয়ে দেবে। ও যে আমার পারিবারিক অ্যাকাউন্টে টাকা দেয়ার প্রসঙ্গ তুলেছে, তা আসলে ওর ঋণের টাকাই ফিরিয়ে দিচ্ছিল। যা আমি বিশ্বাস করে ওকে দিয়েছিলাম। ওর কাছ থেকে এখনও অনেক টাকা বাকি আছে। ও বিবৃতিতে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে, সেগুলো মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। এর মাধ্যমে আমি অপমানিত হয়েছি। এই আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে আমি যে কথা উল্লেখ করলাম, তার জন্য কোনো প্রমাণ আমাকে খুঁজতে হবে না। কারণ সব প্রমাণই আছে। আমার ব্যাংক এবং ক্রেডিট কার্ডের বিবৃতি এই সত্যকে সমর্থন করার জন্য যথেষ্ট। আমার পরিবার নিজের মেয়ে ভেবে নুসরতকে দু হাত বাড়িয়ে গ্রহণ করেছিল। আমরা কেউই বুঝতে পারিনি এই দিন আমাদের দেখতে হবে।
৯. এই পরিস্থিতিতে আমি সমস্ত সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করছি, আমাকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো প্রশ্ন না করতে। এই বিষয় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং বর্তমানে আদালতের অধীন।