অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস
সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে দেশের সব বিভাগেই অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে এটি মধ্যপ্রদেশের মধ্যাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম উত্তরপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চারনশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল উড়িষ্যা, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরের মধ্যে চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটার বা তারও বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। তাই সমুদ্রবন্দরগুলো, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
পূর্ণিমা ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে দুই ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে। এ অবস্থায় উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে বগুড়ায়, ১৪২ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে, ৩১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৮ মিলিমিটার, আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।