অডিট আপত্তি: পাঁচ মাসে ১৩৮ কোটি টাকা দিতে রবিকে নির্দেশ
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার নিরীক্ষা দাবির মধ্যে ১৩৮ কোটি টাকা কিস্তিতে পাঁচ মাসের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
আদালতে রবির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানজীব উল আলম ও কাজী এরশাদুল আলম; বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
আদেশের পর বিটিআরসির আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এর আগে গ্রামীণফোনের ১২ হাজার কোটি টাকার নিরীক্ষা দাবির মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ হাই কোর্ট আনুপাতিক হিসাব করে রবিকে ১৩৮ কোটি টাকা দিতে বলেছে।”
আর আইনজীবী এরশাদ বলেন, রবি কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দিলে তারা হাই কোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার বিষয়ে ভাববেন।
গত বছরের ৩১ জুলাই গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি করে চিঠি দেয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
কয়েক দফা চেষ্টায় সেই টাকা আদায় করতে না পেরে লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিয়ে নোটিস পাঠানো হয় দুই অপারেটরকে। কিন্তু বিটিআরসির দাবি করা টাকার ওই অঙ্ক নিয়ে বরাবরই আপত্তি জানিয়েছে দুই অপারেটর।
সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তিতে বিটিআরসি রাজি না হওয়ায় দুই কোম্পানি আদালতের দ্বারস্থ হয়। বিটিআরসির দেওয়া ওই নোটিস চ্যালেঞ্জ করে নিম্ন আদালতে টাইটেল স্যুট (মামলা) করে রবি। মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও চাওয়া হয়।
কিন্তু নিম্ন আদালত রবির অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দিলে হাই কোর্টে আপিল করে রবি। সেই আবেদনের শুনানি করে হাই কোর্ট গত ২৫ নভেম্বর রুল জারি করে। রবির কাছে পাওনা আদায়ে বিটিআরসিকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
সেই রুলের ওপর আদেশ হওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বরে। কিন্তু তা পিছিয়ে রোববার আদালতে আসে। রুলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে হাই কোর্ট গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের নির্দেশনার আদলে আদেশ দেয়।
গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির নোটিসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল হাই কোর্ট।
গত ২৪ নভেম্বর তা বহাল রেখেই আপিল বিভাগ অবিলম্বে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয় গ্রামীণফোনকে।
কিন্তু সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এরপর রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠায় গ্রামীণফোনের মালিক কোম্পানি টেলিনর।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে দেশের বড় দুই অপারেটরের বিরোধ মেটাতে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। কিন্তু তাতে কোনো সমাধান আসেনি।