অগ্নিঝরা মার্চ
দ: প্রতিবেদক
৬ই মার্চ, ১৯৭১। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে উত্তাল সারাদেশ। পুরো দেশ পরিণত হয় মিছিলের দেশ হিসেবে ।
‘জয় বাংলা – জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘বীর বাঙ্গালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো ‘এই শে-াগানে মুখরিত হতে থাকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢা.বি. ক্যাম্পাস, পল্টন ময়দান আর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধুর বাড়ি। সময়ের সাথে সাথে অসহযোগ আন্দোলনের গন্তব্যও স্পষ্ট হচ্ছিল। সবার মনে আকাঙ্খা কখন আসবে স্বাধীনতার ডাক। পরের দিন অর্থ্যাৎ ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের জনসভায় বঙ্গবন্ধু কি ঘোষণা দেন তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল সারা দেশ। একই সাথে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি ও ছিল সেই দিকে। ৭ই মার্চের ভাষন ঠিক করতে এ দিন বঙ্গবন্ধু মিটিং করেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে।
পুরো জাতি যখন স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত তখনো বাঙ্গলীর স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ইয়াহিয়া খান । এ দিন হঠাৎ করে এক রেডিও ভাষনে ২৫শে মার্চ ঢাকায় জাতীয় পরিষদের বৈঠক বসবে বলে ঘোষনা দেন।
ইয়াহিয়া পূর্ব পাকিস্তানী মুক্তিকামি জনতাকে ‘দুষ্কৃতিকারি‘ আখ্যা দিয়ে বলেন, জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হতে দেব না, ঐক্য বিনষ্টের যে কোন প্রচেষ্টা সেনাবাহিনী কঠোর হস্তে দমন করবে। কুখ্যাত জেনেরেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে ঘোষনা দেন ইয়াহিয়া। এ ঘোষনার সঙ্গে সঙ্গে রাজপথে নেমে আসে প্রতিবাদি ছাত্র-জনতা। স্বাধীনতার দাবী আরও জোরালো ভাবে উঠে আসে। বিকেলে বায়তুল মোকাররমের সামনে এক সমাবেশে মাওলানা ভাসানী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সকলকে মুক্তিসংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানান। এ দিন সাংস্কৃতিক কর্মীরাও রাজপথে মিছিল করেন। মিছিলে নায়ক রাজ্জাক, নায়িকা কবরী, পরিচালক জহির রায়হানসহ জনপ্রিয় ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন।