November 29, 2024
আঞ্চলিক

অগ্নিঝরা মার্চ

দ: প্রতিবেদক

অগ্নিঝরা মার্চের চতুর্থ দিন আজ। ১৯৭১ সালের এইদিনে বঙ্গবন্ধু ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। ঢাকায় সাময়িকভাবে কার্ফ্যু তুলে নেয়া হলেও চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুরে তা বলবত থাকে। খুলনায় হরতাল পালনকালে নিরস্ত্র মানুষের ওপর সেনাবাহিনীর বিক্ষিপ্ত গুলিবর্ষণে ৬জন নিহত ও ২২জন আহত হয়। চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণে দুইদিনে ১২০জন নিহত ও ৩৩৫ জন আহত হন। সারাদেশে আহতদের চিকিৎসার্থে বঙ্গবন্ধুর আহŸানে সাড়া দিয়ে শত সহগ্র মানুষ লাইন দিয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও নিহতদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এ রকম উত্তাল পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু তাঁর বাসভবনে আওয়ামী লীগের এক মূলতবী সভায় ভবিষ্যত কর্মসূচী ব্যাখ্যা করে সংগ্রামের নতুন দিকনির্দেশনায় বলেন, আজ আওয়ামী লীগ নয় গোটা বাঙালি জাতিই অগ্নিপরীার সম্মুখীন। আমাদের সামনে আজ দুটো পথ খোলা আছে। একটি সর্বাত্মক ত্যাগ স্বীকারের জন্য নিজেদের মনোবল অটুট রেখে অবিচলভাবে পূর্ণ স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাওয়া অথবা ভুট্টো ইয়াহিয়ার কথামতো সবকিছু মেনে নেয়া।” নিজের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, আপনারা জানেন, আমি সারা জীবন মতার মসনদ তুচ্ছজ্ঞান করে দেশ ও জাতির কাছে আমার জীবন মর্টগেজ রেখেছি। বাংলার মানুষ গুলি খেয়ে বন্দুকের নলের কাছে বুক পেতে দিয়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার ফাঁসিকাষ্ঠ থেকে আমাকে মুক্ত করে এনেছে। আমার ৬ দফা কর্মসূচির প্রতি ম্যান্ডেট দিয়েছে। এখন শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি অশ্রদ্ধা জানিয়ে পাকিস্তানিদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে অবমাননাকর শর্তে কী করে মতায় যাই।’ অতঃপর বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের মধ্যে সারাদেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কাঠামো তৈরির নির্দেশ প্রদান করেন। এ দিনের উলে¬খযোগ্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রের নতুন নামকরণ করেন ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র।’ পাকিস্তান টেলিভিশনের নাম পাল্টে ‘ঢাকা টেলিভিশন‘ নাম দিয়ে অনুষ্ঠান স¤প্রচারিত হতে থাকে। কার্যত সারা বাংলা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে পরিচালিত হতে থাকে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *