অক্সিজেন সঙ্কটে ইন্দোনেশিয়া
ইন্দোনেশিয়ায় করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বেশ কিছু শহরে অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগে হাসপাতালগুলোকে প্রাধান্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা আছে তা নিয়েই তারা কাজ চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। খবর বিবিসির।
এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, অক্সিজেন সঙ্কটে ৬৩ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইন্দোনেশিয়ায় বর্তমানে প্রতিদিন ২৫ হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশটির প্রধান দ্বীপ জাভায় আবারও লকডাউন জারি করা হয়েছে।
একই সঙ্গে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় বালি দ্বীপেও পুনরায় লকডাউন জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার থেকে এই দুই দ্বীপে চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আনা হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন কার্যকর থাকবে।
গত কয়েক মাসে ইন্দোনেশিয়ায় কয়েক লাখ কোভিড কেস শনাক্ত হয়েছে। ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যাওয়া এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। আগামী দুই সপ্তাহ লকডাউন জারি থাকবে এবং এর ফলে প্রতিদিন নতুন সংক্রমণ ১০ হাজারের নিচে নামানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। অপরদিকে মারা গেছে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ।
সোমবার বানদাং শহরের দুই হাসপাতাল জানিয়েছে, তাদের অক্সিজেনের মজুত ফুরিয়ে এসেছে। তারা আর নতুন করে কোনও রোগীকে চিকিৎসা দিতে পারবে না। বানদাং, সুরাকার্তা এবং পামেকাসান শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। অনেকেই হাসপাতালের বাইরে তাঁবু বানিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে।
চিকিৎসার জন্য বয়স্ক মাকে নিয়ে আসা এক নারী বলেন, মনে হচ্ছে এটা যুদ্ধের মতো জরুরি অবস্থা। তিনি একটি হাসপাতালে তার মাকে ভর্তি করানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। সেখানে শয্যা খালি ছিল না। পরে অস্থায়ী একটি হাসপাতালে জায়গা মেলে তার।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিতি নাদিয়া তারমিজি জানিয়েছেন, তারা গ্যাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে মেডিক্যাল অক্সিজেন উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছে। তিনি লোকজনকে অতিরিক্ত অক্সিজেন মজুত না করার আবেদন জানান।
এদিকে ইন্দোনেশিয়ার এই সঙ্কটময় মুহূর্তে দেশটিতে মডার্নার ৪০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় ইন্দোনেশিয়ায় যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন পাঠানো হচ্ছে। এই ভ্যাকসিন ইন্দোনেশিয়ায় করোনার বিরুদ্ধে জনগণকে সহায়তার জন্য পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।