৩৭ শতাংশ সংসদ সদস্য আয়কর দেননি : সুজন
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
একাদশ নির্বাচনে নির্বাচিত ৩৭ শতাংশ সংসদ সদস্য (এমপি) আয়কর দেননি বলে জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ীদের তথ্য উপস্থাপন শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদের ২৯৮জন নির্বাচিত সংসদ সদস্যের মধ্যে ৬৩ দশমিক ০৮ শতাংশ (১৮৮ জন)। তার মধ্যে ১ লাখ টাকার বেশি আয়কর দিয়েছেন ১৫০ এমপি। আর সবচেয়ে বেশি আয়কর দিয়েছেন এমপি গোলাম দস্তগির গাজী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারি দিলীপ কুমার সরকার জানান, এই সংসস সদস্যদের মধ্যে ২৪৪ জনের সম্পদের পরিমাণ ৮১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। পেশার দিক থেকে ৬১ শতাংশ এমপি (১৭৪জন) ব্যবসায়ী। ৮০ শতাংশ এমপির শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর।
প্রার্থীদের মামলার চিত্র তুলে ধরে সুজন জানিয়েছে, নির্বাচিত ২৯৮ জনের মধ্যে ২১ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা আছে। আগে ছিল ১২২ জনের বিরুদ্ধে। ৩০২ ধারায় মামলা রয়েছে এমন প্রার্থী চারজন। আগে ছিল ৩৩ জনের বিরুদ্ধে। নির্বাচিতদের মধ্যে মাত্র ৪০ জন ঋণগ্রহীতা রয়েছেন।
দিলীপ কুমার সরকার বলেন, নির্বাচনে অনিয়মেরও অনেক অভিযোগ আমাদের গোচর হয়েছে। কোনোও কোনোও কেন্দ্রে ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া, ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া, ভোটারদের প্রকাশ্যে সিল মারতে বাধ্য করা, দীর্ঘ সময় লম্বা লাইন করে দাঁড়িয়ে থাকলেও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ না করা, কোনোও কোনোও কেন্দ্রে অস্বাভাবিক বেশি বা কম ভোট পড়া, ইভিএম ও অন্য আসনগুলোর মধ্যে আগমঞ্জস্যতা লক্ষনিয় ছিল।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে মহাজোটের মহাবিজয় হয়েছে এবং মহাবিপর্যয় হয়েছে ঐক্যফ্রন্টের। এর কারণ অনুসন্ধান করলে দু’টি বিষয় বেরিয়ে আসবে। এগুলো হচ্ছে- জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও নির্বাচনী অনিয়ম। অনিয়মের অভিযোগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা কোনোও নির্বাচন পরজবেক্ষন করি না। তবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর কাজ করি। নির্বাচন নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনে যেসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে-কমিশনের দায়িত্ব হবে সেগুলো তদন্ত করা। অনিয়ম প্রমাণিত হলে নির্বাচন বাতিল করারও ক্ষমতা আছে কমিশনের।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, আমি যেই কেন্দ্রের ভোটার সেই কেন্দ্রে দেখেছি নৌকা ও হাতপাখার পোস্টার ছাড়া অন্য কোনোও প্রার্থীর পোস্টার নেই। নির্বাচনে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত ছিল।স্বতঃস্ফূর্ততা না থাকলে এটাকে সুষ্ঠু নির্বাচন বলা যায় না। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান প্রমুখ।