১৩ই মার্চ : খুবির কালো দিন
রেজওয়ান আহম্মেদ, খুবি প্রতিনিধি
১৩ই মার্চ। অন্যান্য দিনের মতই একটা দিন। যদি সুযোগ থাকতো তাহলে হয়তো খুবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলতো এই দিনটা আর আসিস না আমাদের জীবনে। কারণ এখনো এই রাতে ঘুমাতে পারেন না খুবির অনেক শিক্ষক। আর কিছু সন্তানহারা বাবা মায়ের হাহাকার তো বেড়েই যায় এই দিনটাতে। পেরিয়ে গেছে এক যুগেরও বেশি সময়,তবুও দিনটা যেন প্রতিবছর নতুন করে সেজেগুজে আসে বেদনার এক সমুদ্র নিয়ে। দিনটি ছিলো ২০০৪ সালের ১৩ই মার্চ। যৌবনের মহাসঙ্গীতের সুরে তাল মেলাতে মেলাতে গিয়েছিল তারা প্রকৃতির কাছে। আমাদের গর্বের সুন্দরবনের কাছে। কিন্তু নিষ্ঠুর প্রকৃতি তাদেরকে আর ফিরতে দেয়নি খুবির বুকে, বাবা মায়ের কোলে। সহপাঠীরা কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসে নিজের ক্যাম্পাসে কিন্তু বন্ধুদেরকে আর পাওয়া যায়নি তপনের চায়ের আড্ডায়, আর ক্লাসরুমে। ছাত্ররাজনীতির দূষিত থাবা না থাকায় এখনো একফোঁটা রক্ত ঝরেনি এ ক্যাম্পাসে কিন্তু বয়ে নিয়ে বেড়াতে হচ্ছে কিছু মেধাবীর অসহনীয় লাশ। সুন্দরবনের কটকা সৈকতে সেদিন বসেছিলো মেধাবীদের মেলা সেটা কেমন যেন সহ্য হয়নি রাক্ষুসে সমুদ্রের। ভাটার টানে নিয়ে গিয়েছিল বেশ কিছু তাজা প্রাণ কিন্তু বন্ধুদের দুঃসাহসিক চেষ্টায় কয়েকজনকে বাঁচানো সম্ভব হলেও “ওরা ১১ জন” আর ফিরতে পারেনি। সেদিন থেকে খুবির ইতিহাসে যোগ হয় একটি কালো অধ্যায়, পালিত হয়ে আসছে “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস” হিসেবে। ১১ জন ভবিষ্যৎ প্রকৌশলীকে হারানোর গøানি বুকে নিয়ে দাড়িয়ে আছে কটকা স্মৃতিসৌধ। যতদিন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে, যতদিন কটকা স্মৃতিসৌধ থাকবে ততদিন নতুন নতুন অভিযাত্রীদের শুনাবে এই হারানোর গল্প, বেদনার গল্প।