রোগীদের সম্মানের সঙ্গে সেবা দেওয়ার নির্দেশ
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদেরকে সম্মানের সঙ্গে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, শুধু চিকিৎসা সেবা দিলে হবে না। রোগীদেরকে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে চিকিৎসা দিতে হবে। এই সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে আপনারা একজন বড় মাপের চিকিৎসক হয়ে গড়ে উঠবেন। ফাঁকি দিয়ে কেউ কোনোদিন বড় চিকিৎসক হতে পারেনি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সম্মেলন কক্ষে ‘৩৭তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা ও ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার আগে মানুষের মনের অবস্থা জানতে হবে। এটা আপনাদের জন্য প্রতিদান দেওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ। যাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আপনারা পড়াশোনা করেছেন তাদেরকে সেবাদানের মাধ্যমে প্রতিদান দেওয়ার সুযোগ। তাই হাসপাতালে গিয়ে যেন দেখা না যায় যে, সেখানে চিকিৎসক নেই। অনেক সময় মুমূর্ষু রোগীদের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না হলেও ব্যবহারে অনেক কিছু সম্ভব।
দেশের উপজেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের জন্য গাড়ির সরবরাহ করা হবে উলেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশের উপজেলাগুলোতে ব্যাপকভাবে গাড়ির সংকট রয়েছে। এসব সংকট দূরের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ৪০০ গাড়ি ক্রয়ের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তাছাড়া তার নির্দেশে আরও ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থার জন্য।
প্রতিদিন দেশে ২০ হাজার সরকারি ইউনিটে ১০ লাখ লোক চিকিৎসা গ্রহণ করে উলেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, দেশে চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। চিকিৎসককে আঘাত করলে সেটা ক্রিমিনাল আইনে মামলা হবে।
স্বাস্থ্যসেবা ডিজাইন করা হয়েছিল কমিউনিকেবল ডিজিজকে কেন্দ্র করে উলেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ডিজাইন করা হয়েছিল শুধুমাত্র কমিউনিকেবল ডিজিজগুলোকে কেন্দ্র করে। সেদিক দিয়ে আমরা সফল হয়েছি। কিন্তু বর্তমানে নন কমিউনিকেবল ডিজিজ মারাত্মক রূপ ধারণ করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সে অনুসারেই সারা দেশে ক্যান্সার ও মা ও শিশু বিষয়ক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আপনাদেরকে নন কমিউনিকেবল ডিজিজগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগী হতে হবে।
বর্তমানে প্রাথমিক চিকিৎসায় বিশ্বে আমরা প্রথম অবস্থানে আছি। এছাড়া ভারত, পাকিস্তানসহ আশেপাশের দেশগুলোর চেয়ে আমাদের মা ও শিশু মৃত্যুর হার অনেক কম বলেও জানান তিনি।
মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেহ উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা, বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ৩৭তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডার হিসেবে যোগদান করা সর্বমোট ৩০৬ জন চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।