রাজনীতিতে বাস্তবতা বড় নির্মম / অসিত বরণ বিশ্বাস
অসিত বরণ বিশ্বাস
খুলনা-বাগেরহাট জেলার রাজনীতির সেই দুঃসময়ের প্রেক্ষাপট আজ জ্বলন্ত। এখনো মনে করলে শরীর শিহরণ দিয়ে ওঠে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের নীল নকশার ক্ষমতায়ন আর ২০০৭ সালে জরুরী অবস্থা থেকে ১/১১ শেষ অবধি পর্যন্ত সেই সময়ের কি করুণ ইতিহাস।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে থেকেও সব চেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল ২০০৭ জুন মাসে আপা গ্রেফতার হওয়ার সময়। এখনো স্পষ্ট মনে আছে আপা গ্রেফতার হওয়ার সময় সাবেক প্রতিমন্ত্রী, বর্তমান খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র খালেক ভাইয়ের একটা মামলায় আমরা খুলনা কোর্ট চত্বরে অবস্থান করছিলাম।
তখন আপার গ্রেফতারের কথা শুনে আমরা সবাই হতবাগ হয়েছিলাম এবং তখন কোর্ট চত্ত্বরে মিছিল মিটিং নিষেধ থাকা স্বত্ত্বেও আপার গ্রেফতারের প্রতিবাদে আমরা খালেক ভাইয়ের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক কর্মী কোর্ট চত্বরে মিছিল করি। আপা গ্রেফতারের পরবর্তী সময় দেখেছি খুলনার রাজনীতির বাস্তব চিত্র।
সে সময় খুলনা-বাগেরহাটের অনেকেই দেখেছিলাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতা কর্মীদের নিয়ে উপহাস করতো। মিথ্যা মামলার চাপে অনেক সিনিয়র নেতারা প্রানে বাঁচতে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে গিয়েছিলেন। তখন দেখেছি অনেকেই আমাদের বড় বড় নেতাদের নিয়ে গালিগালাজ করতো। বলতো আমাদের বিপদে রেখে নেতা বিদেশে গিয়ে আরাম আয়েশ করছে।
এমনকি নেত্রীর গ্রেফতারকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়ে আনন্দ- উল্লাস করেছিল। অনেক প্রভাবশালী নেতারা আমাদের কে নিষেধ করেছিল রাজনীতিতে সক্রিয় না হতে। কিন্তু সে সময় আমিসহ কিছু নিবেদিত কর্মীরা জীবন কে বাজি রেখে দূর্বার ভাবে প্রতিনিয়ত রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করতাম জননেত্রীর মুক্তির দাবিতে।
কিন্তু আজ দেখি দুঃসময়ের সেই বসন্তের কোকিলরা, গালিগালাজ করা মানুষগুলো বর্তমানে এই দলের নীতি নির্ধারক এর পর্যায়ে আছেন। অনেকেই দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করে বহু অর্থ- বিত্তের মালিক হয়েছেন। কিছুই বলার নাই! রাজনীতি আজ সেই-সব কুশীলবরা বুক পকেটে নিয়ে ঘুরে। আজ সময়তো তাদেরই। এখন চাইলেই তারা অনেক কিছু করতে পারেন।
আর আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশ্বস্থ হাতিয়ার তারা কেমন আছি, কোথায় আছি, সেটা আপনারাই ভালো জানেন। আমরা অর্থ- বিত্তের মালিক হতে চাই না, দলের দুঃসময়ে সর্বদা পাশে থাকতে চাই। আর সেটাই আমাদের সার্থকতা।
দলের সু-সময় নয়, দলের দুঃসময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার পাহারাদার হয়ে থাকতে চাই।
লেখক : নির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, খুলনা জেলা শাখা।
দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিন/ এম জে এফ