মাশরাফির সমালোচকদের ধুয়ে দিলেন তামিম
ক্রীড়া ডেস্ক
এইতো সেদিন আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা জেতার পর সে কি প্রশংসা! দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরুর পরও প্রশংসার ধারা অব্যাহত। কিন্তু পরের দুই ম্যাচ শেষে সব উধাও! চারদিক অন্ধকার করে ছুটে এলো সমালোচনার ঝড়। এই ঝড়ের মূল শিকার হলেন টাইগার ওয়ানডে দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা।
এমনকি তাকে একাদশ থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও জানিয়ে বসলেন অনেকে। এবার অধিনায়কের হয়ে সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল।
চলতি বিশ্বকাপে নিজদের তৃতীয় ম্যাচে ইংলিশদের কাছে ১০৬ রানের বিশাল পরাজয় বরণ করে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে দলের বোলারদের যখন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা নাভিশ্বাস তুলে ছাড়ছেন, সেসময় ৫০ বলে ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা জনি বেয়ারস্টোকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দেন মাশরাফি।
বেয়ারস্টো’র ওই উইকেটটি এবারের বিশ্বকাপে মাশরাফির প্রথম উইকেট। তাও ৬৮ রান খরচ করে। নিজের শেষ ওভারে ১৮ রান না দিলে ৯ ওভারে ১ উইকেটে হতো ৫০ রান। খুব একটা খারাপ না। কিন্তু তিনি ডেথ ওভারে বল করার ঝুঁকি নিয়েছেন। পাঁচ ম্যাচ পর উইকেট পেলেও তা কাজে লাগেনি। ফলে সমালোচনার ঝড় তার দিকেই ধেয়ে এসেছে।
সাকিব ছাড়া দলের বাকিদের অবস্থাও সেদিন তার চেয়ে খুব একটা ভালো ছিল না। ওপেনার তামিম তো এখন পর্যন্ত নিজের ছন্দই খুঁজে পাননি। কিন্তু সব দোষ শুধুই মাশরাফির ঘাড়েই চাপানোর চেষ্টা করছেন অনেকে। দেশের সমর্থকরা তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপত্তিকর কথা বলেই যাচ্ছেন। আবার দেশের বাইরে সাবেক ভারতীয় পেসার অজিত আগারকারও মাশরাফিকে বাদ দিতে বলেছেন।
শনিবার অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের অধিনায়কের হয়ে সমালোচকদের উদ্দেশে তামিম বলেন, ‘যারা তাকে (মাশরাফি) নিয়ে সমালোচনা করছে বা লিখছে, তারা এসব বলার কিংবা লেখার আগে যদি দুটো মিনিট চিন্তা করে যে কার ব্যাপারে বলছে। তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য গত ১৫-১৬ বছর ধরে কি করেছেন।’
মাশরাফির ফিটনেস নিয়ে সমালোচনার জবাবে তামিমের উত্তর, ‘উনি যদি আনফিট হন, তাহলে তো সেটা ১০ বছর ধরেই। তখন আমরা আবেগ থেকে দেখেছি। এখন একটু এদিক-সেদিক হলেই অনেক বড় করে দেখছি। আমরা এমন একজনকে নিয়ে কথা বলছি যার হাত ধরে আমাদের এত দূর আসা। এটা আমাদের দল কিংবা আমার নিজের জন্য প্রযোজ্য। তাকে নিয়ে এসব সমালোচনা খুব অন্যায্য। আমি মনে করি আরও বেশি শ্রদ্ধা প্রাপ্য তার।’
ইংলিশদের বিপক্ষে ম্যাচের পর সমালোচনার কাতারে যোগ দেন আগারকার। বাংলাদেশের একাদশে মাশরাফির সুযোগ পাওয়াই উচিত নয় বলে মন্তব্য করে বসেন তিনি। তামিম এই কথারও জবাব দিয়েছেন। নাম উলেখ না করেই তামিম বলেন, ‘বিদেশি অনেকে কথা বলছেন শুনেছি। আমার একটা প্রশ্ন, উনারা নিজেদের জীবনে কি করেছেন? আর আমার কাছে বাইরের মানুষের কথা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু দেশের মানুষদের বোঝা উচিত মাশরাফি দেশের জন্য কতোটা করেছে।’
একজন ক্রিকেটারের জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। ক্যারিয়ারের ভালো এবং খারাপ দু’ধরনের ঘটনাই ঘটবে। কখনো ভালো খেলবে আবার কখনো খারাপ। তাই বলে তাকে বাদ দিতে হবে এমনটা মনে করেন না তামিম। দলের সবাই তো ভালো করতে পারে না। এটা সব দলের জন্যই প্রযোজ্য। তাই ভালো করলে যেমন পাশে থাকতে হবে, খারাপ করলেও পাশে থাকা জরুরি।
