মস্কোর পরিস্থিতি যা দেখা যাচ্ছে ‘তার চেয়েও ভয়ংকর’
মস্কোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও অনেক অনেক বেশি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন।
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও অনেক অনেক বেশি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন শহরটির মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন।
মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তিনি এ আশঙ্কার কথা জানান।
একইদিন মস্কোর কাছে একটি হাসপাতাল পরিদর্শনে যাওয়া পুতিনকে সুরক্ষা স্যুট ও বায়ুশোধক মাস্ক পরতে দেখা গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
সোবিয়ানির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। মস্কোর করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে তার এ উদ্বেগের সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কার মিল পাওয়া যায়। রাশিয়াজুড়ে প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটির বিস্তৃতির পূর্ণাঙ্গ রূপ এখনো ধরা পড়েনি বলে বিশেষজ্ঞরা বেশকিছুদিন ধরেই ইঙ্গিত দিয়ে আসছিলেন।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ৪৯৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলোর তুলনায় এ সংখ্যা একেবারেই নগণ্য।
পুতিন এর আগে ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে’ বলে দাবি করেছিলেন। দেশটির কিছু চিকিৎসক অবশ্য শুরু থেকেই আক্রান্ত-মৃত্যুর সরকারি হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছিলেন।
ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় মঙ্গলবার রুশ সরকার দেশটির সব নাইটক্লাব, সিনেমা হল ও শিশু বিনোদন কেন্দ্র বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
“ভয়াবহ পরিস্থিতি উন্মোচিত হচ্ছে,” বৈঠকে পুতিনকে বলেছেন সোবিয়ানিন। মস্কোতে সত্যিকারের আক্রান্তের সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এ সংখ্যা বাড়ছে, বলেছেন এ মেয়র।
ভাইরাস শনাক্তে পরীক্ষা কম হয়েছে; বিদেশ ফেরত মস্কোর অনেক বাসিন্দা ঘরে অথবা গ্রামাঞ্চলের হলিডে কটেজগুলোতে স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে আছেন, বলেন সোবিয়ানিন।
“বাস্তবে, অসুস্থ মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি,” বলেছেন পুতিনঘনিষ্ঠ এ মেয়র।
রাশিয়ার সরকার বলেছে, করোনাভাইরাস উপদ্রুত অন্যান্য দেশে অবস্থান করা রুশ নাগরিকরা চাইলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেবে তারা।
মঙ্গলবার মস্কোর উপকণ্ঠে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া একটি হাসপাতাল পরিদর্শনে যান রুশ প্রেসিডেন্ট। এ সময় তার পরনে ছিল সারা শরীর আবৃত করা উজ্জ্বল হলুদ রঙের হেজমাট সুরক্ষা স্যুট ও বায়ুশোধক মাস্ক। হাসপাতালটিতে গিয়ে পুতিন সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকদের প্রশংসাও করেছেন।
এদিকে রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার ভায়াচেস্লাভ ভোলোদিনসহ দুই জ্যেষ্ঠ সাংসদ ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে কোয়ারেন্টিনের নির্দেশনা অমান্য করলে কারাদণ্ডসহ নানা ধরনের শাস্তির বিধান রেখে একটি আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করেছেন।
বিলে গণসংক্রমণে ভূমিকা রাখলে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং কারও দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপে সংক্রমণ ছড়িয়ে দুই বা বেশি মানুষের মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ জানিয়েছে।