October 30, 2024
জাতীয়

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী পেয়েছে হারিকেনের তীব্রতা

 

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও শক্তি সঞ্চয় করে পরিণত হয়েছে হারিকেনের তীব্রতাসম্পন্ন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার গতিতে ওড়িশা উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে থাকা এ ঘূর্ণিঝড় আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে যাচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল ফণী।

আর ভারতের আবহাওয়া অফিসের হিসাবে সকাল ৬টায় ফনীর অবস্থান ছিল শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালি থেকে ৬৭০ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে, তামিল নাড়ুর চেন্নাই থেকে ৬৯০ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্বে এবং অন্ধ্রের মাচিলিপত্তম থেকে ৭৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে।

ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল।

ভারতীয় আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস ঠিক হলে মঙ্গলবার সারাদিনে এ ঝড়ের শক্তি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকবে। বুধবার বিকালের দিকে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ১৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।

ফণীর মতিগতি বিশ্লেষণ করে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার যে সম্ভাব্য গতিপথ বের করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বুধবার পর্যন্ত এ ঝড় অন্ধ্র উপকূলের দিয়ে অগ্রসর হয়ে তারপর উত্তরে বাঁক নিয়ে ওড়িশা-কলকাতা উপকূলের দিকে এগোতে পারে।

এরপর শুক্র অথবা শনিবার ওড়িশা ছুঁয়ে ফনী উঠে আসতে পারে কলকাতা উপকূলে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ আরও বদলালে উপকূল অতিক্রমের জায়গাও বদলে যেতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ আশপাশের আকাশ থেকে মেঘ টেনে নিচ্ছে নিজের কেন্দ্রের দিকে। ফলে দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। সোমবার রাজশাহীতে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে; সারা দেশে এটাই ছিল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস বলেন, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে যে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।

মঙ্গলবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *