October 30, 2024
জাতীয়

পদ্মায় বসছে আরেকটি স্প্যান

দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
নাব্য সঙ্কট কাটিয়ে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে বসছে আরও একটি স্প্যান; সব ঠিক থাকলে দুই প্রান্ত মিলিয়ে দক্ষিণ জনপদের মানুষের স্বপ্নের এই সেতুর ১০৫০ মিটার অংশ আজ বুধবারই দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে।
সেতু বিভাগের প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর জানান, ভাসমান ক্রেইন তিয়ানি হাউ মুন্সীগঞ্জের কুমারভোগের বিষেশায়িত ওয়ার্কশপ থেকে স্প্যানটি নিয়ে মঙ্গলবার জাজিরা পৌঁছায়। বুধবার পদ্মাসেতুর ৩৬ ও ৩৭ নম্বর পিয়ারের ওপর সেটি বসানো হবে।
এটি হবে জাজিরা প্রান্তের ষষ্ঠ স্প্যান। এর আগে ৩৭ থেকে ৪২ নম্বর পিয়ারে পাঁচটি স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে জাজিরা পাড়ের সঙ্গে পদ্মা সেতুর সংযোগ ঘটে। এছাড়া মাওয়ার দিকে সেতুর ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারের ওপর আরেকটি স্প্যান বসিয়ে রাখা হয়েছে গতবছর।
ওই স্প্যানটি তৈরি করা হয়েছে ৬ ও ৭ নম্বর পিয়ারে বসানোর জন্য। কিন্তু নকশা জটিলতায় ওই দুটি পিয়ার তৈরি না হওয়ায় এবং ওয়ার্কশপে জায়গা না থাকায় অস্থায়ীভাবে সেটি ৪ ও ৫ নম্বর পিয়ারে তুলে রাখা হয়। এখন নকশা জটিলতা কেটে যাওয়ায় ৬ ও ৭ নম্বর পিয়ার তৈরি হলে স্প্যানটি সেখানে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রতিটি ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের মোট ৪১টি স্প্যান ৪২টি পিয়ারের ওপর বসিয়েই তৈরি হবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু। দ্বিতল এই সেতুতে থাকবে রেল চলাচলের ব্যবস্থাও। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর প্রায় ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে সেতু কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছরের মধ্যেই সব স্প্যান বসিয়ে ফেলা যাবে বলে আশা করছেন তারা।
প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর জানান, জাজিরা প্রান্তের ষষ্ঠ স্প্যানটি আরও আগেই বসানোর কথা ছিল। কিন্তু কুমারভোগের ওয়ার্কশপ থেকে প্রায় তিন হাজার টন ওজনের স্প্যানটি নিয়ে বিশাল আকারের ভাসমান ক্রেইনের জাজিরা যাওয়ার মত পানি নদীতে ছিল না।
মাঝের চর নামের বিশাল একটি চর কেটে সেতুর জন্য যে চ্যানেল করা হয়েছিল, তার প্রায় পুরোটায় গত বর্ষা মৌসুমে পলি জমে গভীরতা কমে যায়। সে কারণে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির তিনটি ড্রেজার এবং স্থানীয় আরও চারটি ড্রেজার দিয়ে গত কিছুদিন পলি সরিয়ে নাব্য সঙ্কট কাটাতে হয়েছে।
এর পূর্বে গত ১৫ জানুয়ারী পদ্মা সেতুর সর্বশেষ পিলারটির নকশা অনুমোদনের মধ্য দিয়ে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান হয়েছে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে। সেতু নির্মাণে আর কোন জটিলতা এখন আর নেই। এদিকে নদীর নীচে মাটির গঠনের কারণে মাওয়া প্রান্তের ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। ফলে নদীর ওই অংশের কাজ অনেকদিন ধরেই থমকে ছিল।
প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে যে নতুন নকশা তৈরি করা হয়েছে তা গত ১৫ জানুয়ারি অনুমোদন পেয়ে যাওয়ায় এখন ৬ ও ৭ নম্বর পিলার বসানোর সমস্যাও মিটে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে সামনে বর্ষা মৌসুম থাকায় মাওয়া প্রান্ত আবারও খরস্রোতা হয়ে উঠবে। তখন সেখানে পিলার বসানোও কঠিন হয়ে যাবে। এ কারণে বর্ষা আসার আগেই মাওয়া প্রান্তের সব পিলারের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শেষ করে ফেলতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *