করোনাভাইরাসে বন্ধ এভারেস্টে আরোহন
দক্ষিণাঞ্চল ডেস্ক
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখতে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে আরোহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে নেপাল। বৃহস্পতিবার দেশটির সরকার ১৪ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল আরোহন মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত সবার এভারেস্টে চড়ার অনুমোদন বাতিল করেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। চীন আগেই তাদের অংশ দিয়ে পর্বতশৃঙ্গটিতে আরোহন বন্ধ করে দিয়েছিল।
কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পর্যটন খাত থেকে প্রতিবছর নেপাল যা আয় করে তার মধ্যে এভারেস্টে চড়ার অনুমোদন বাবদই ৪০ লাখ ডলার আসে। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব পর্যটন ভিসা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এখন পর্যন্ত (এভারেস্ট আরোহনে) যেসব অনুমোদন দেয়া হয়েছিল, এবং ২০২০ এর আরোহন মৌসুমে আর যে অনুমোদনগুলো দেয়ার কথা ছিল সব বাতিল করা হচ্ছে, বিবৃতিতে বলেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সেক্রেটারি নারায়ন প্রসাদ বিদারি।
১৪ মার্চের পর আসা বিদেশিদের ১৪দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিশ্বের সর্বোচ্চ এ পর্বতশৃঙ্গ আরোহনে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, যুক্তরাজ্য, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পর্বতারোহীদেরই বেশি দেখা যায়; এতে চড়ার অনুমতি দিয়ে নেপাল সরকারের বিপুল আয়ও হয়।
সাধারণত, প্রত্যেক পর্বতারোহীকে এভারেস্টে আরোহনের অনুমতি নিতে ফি বাবদ ১১ হাজার ডলার খরচ করতে হয়; কয়েক বছর ধরেই নেপাল সরকার এ ফি’র পরিমাণ বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করছে বলেও বিবিসি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নেপাল সরকারের ঘোষণায় স্থানীয় শেরপারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। শেরপারা সাধারণত পর্বতারোহীদের গাইড হিসেবে কাজ করেন; এ থেকে পাওয়া অর্থেই তাদের বছর চলে।
আমার ৯ চীনা ও এক জাপানি খদ্দের এর মধ্যেই তাদের পর্বতারোহন বাতিল করেছেন। অনেক পর্বতারোহী দলও আসছে না, যা আমাদের মতো শেরপাদের জন্য বড় ক্ষতি, যারা এই সময়েই বেশিরভাগ টাকা আয় করে, বিবিসিকে বলেছেন পাইওয়নিয়ার অ্যাডভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লাকপা শেরপা।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তি শনাক্ত হলেও সীমান্তবর্তী ভারতে ৭০ জনেরও বেশি লোকের দেহে কভিড-১৯ ধরা পড়েছে।
নেপালের সরকার নাগরিকদের বিয়ে ও জনসমাগমসহ বড় জমায়েত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। ডিসেম্বরের শেষদিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এরই মধ্যে ১১৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে; এতে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪ হাজার ৬০০।