December 22, 2024
জাতীয়বিশেষ সংখ্যা

আ-মরি বাংলা ভাষা

দ: প্রতিবেদক

আজ ১৩ই ফেব্রæয়ারি। আর মাত্র ৭দিন পর শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এইদিনে পাকিস্তানী বাহিনীর গুলিতে নির্মমভাবে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন পর্যায়ের সাধারণ মানুষ। ভাষা শহীদদের পরিচিতি পর্বে আজ আমরা তুলে ধরেছি শহীদ আবুল বরকতের সংক্ষিপ্ত জীবনী।

ভাষা শহীদ আবুল বরকত ১৬ই জুন ১৯২৭ সালে ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমার ভরতপুর থানার বাবলা নামক একটি ছোট গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। ১৯৪৮ সালেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স কোর্সে ভর্তি হন। ছাত্র হিসাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মনোযোগী, নম্র, ভদ্র ও চরিত্রবান। ১৯৫১ সালে তিনি অনার্স পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেনীতে চতুর্থ স্থান লাভ করেন এবং এম.এ. শেষ পর্বে ভর্তি হন।

১৯৫২ সাল ২১ ফেব্রæয়ারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলের সামনে আমতলায় সর্বদলীয় কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রভাষা কর্মী পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত সমাবেশে যোগদান করেন। ঢাকাসহ সারাদেশে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ এই দাবীতে তখন আন্দোলন তীব্র হয়ে উঠে। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্রজনতার শে¬াগানে শে¬াগানে কেঁপে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পুলিশের সঙ্গে ছাত্র জনতার সংঘর্ষ শুরু হয় বিক্ষিপ্তভাবে। বাঙালি জনতার চোখে সেদিন ছিল ভয়ের পরিবর্তে ঘৃনার আগুন। পুলিশ চেষ্টা করছিল ছাত্রদের ব্যারিকেড ভেঙ্গে হোস্টেল চত্বরে ঢুকতে। কিন্তু, ছাত্রদের শক্ত প্রতিরোধের কারনে তারা ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছিল। বেলা ৩টার দিকে হোস্টেল চত্বরে ঢুকে নির্মমভাবে গুলি চালাতে থাকে পুলিশ। সেই সময় আবুল বরকত অন্য এক বন্ধুর দিকে এগিয়ে এসেছিলেন। হঠাৎ তিনি বুলেটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রথমে কেউ বুঝে উঠতে পারেনি, ততক্ষনে রক্তধারা ছুটে মাটি ভিজে যাচ্ছে। তলপেটে গুলি লেগেছিল তার। পরনের নীল হাফ শার্ট, খাকি প্যান্ট ও কাবুলী স্যান্ডেল রক্তে ভিজে যাচ্ছে। দুই তিন জন ছুটে এসে সুঠামদেহী বরকতকে কাঁধে তুলে জরুরী বিভাগের দিকে দৌড়াতে থাকেন। বরকত তখন বলেছিলেন আমার খুব কষ্ট হচ্ছে হয়ত আর আমি বাঁচবনা, পুরানা পল্টনে বিষ্ণু প্রিয়া ভবনে এ খবর পৌঁছে দিবেন। ডাক্তাররা তাকে বাঁচানো জন্য আপ্রান চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের জন্য সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রæয়ারী রাত ৮টার সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরী ওয়ার্ডে মহান এই দেশ প্রেমিক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শহীদ আবুল বরকতকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালে মরনোত্তর ২১ শে পদক দিয়ে সম্মানিত করেন।

 

 

 

 

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *