আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর আকস্মিক ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ঘনিষ্ঠ মিত্র ভারতে ব্যাপক তৎপরতা দেখা গেছে।
বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে সর্বদলীয় বৈঠকও করেছে দেশটির বিজেপি নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন সরকার। এর মধ্যেই সোমবার (১২ আগস্ট) দিল্লিতে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজেপি নেতা অমিত শাহ।
ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই বলেছে, সোমবার দিল্লিতে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি ও উত্তরপূর্ব ভারতে এর প্রভাব নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেছেন। বৈঠকে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী সাংমা কনরাড ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী প্রেস্টোন টাইনসং উপস্থিত ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি এবং উত্তরপূর্ব ভারতে এর প্রভাবের বিষয়ে পর্যালোচনা করেছেন অমিত শাহ।
বৈঠকে আমাদের জনগণের উদ্বেগ ও আশঙ্কার বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছিল। ভারত সরকার আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বৈঠকে ভারতের সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের মাঝে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়েও কথা হয়েছে। মেঘালয়ে এনপিপি নেতৃত্বাধীন জোট ৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন নিয়ে গত বছর রাজ্য সরকার গঠন করেছে। সাংমার এনপিপি বিধানসভা নির্বাচনে ২৬টি আসনে জয়লাভ করে এবং টানা দ্বিতীয় মেয়াদে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সরকার গঠন করে।
শিক্ষার্থী-নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের মুখে গত সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন ৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনা এবং হেলিকপ্টারে করে দীর্ঘদিনের মিত্র ভারতে পালিয়ে যান। ওই দিন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, শেখ হাসিনা তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে। পরে শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি গোপন সেইফ হাউজে রেখেছে নয়াদিল্লি। নয়াদিল্লির কাছের হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছানোর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে কথা বলেননি তিনি। তবে তিনি কতদিন ভারতে থাকবেন সেটি পরিষ্কার নয়। তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় রোববার বলেছেন, আপাতত তৃতীয় কোনও দেশে তার মায়ের যাওয়ার পরিকল্পনা নেই।