৮০ কোটি ডলার চেয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন গৌতম আদানি
বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ বিপুল পাওনা জমে যাওয়ায় তা পরিশোধের অনুরোধ জানিয়েছে তারা। ওই অর্থ চেয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি লিখেছেন ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দ্য ইকোনমিক টাইমসসহ ভারতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে শিল্প গ্রুপটি। কিন্তু বর্তমানে বকেয়া অর্থ আদায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে তারা। বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ আদানি গ্রুপ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ৮০ কোটি ডলার পায়। সে অর্থ পরিশোধে ড. ইউনূসের সুদৃষ্টি কামনা করে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে গৌতম আদানি বলেন, আমরা যখন বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বজায় রাখছি, সে সময়ে ঋণদাতারা আমাদের ওপর কঠোর হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ যে পাওনা হয়, তা নিয়মিত ভিত্তিতে পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করছি। একটি আধুনিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও প্রয়োজনীয় সঞ্চালনব্যবস্থা তৈরি করতে আদানি পাওয়ার ২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। আপনার দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নের প্রতি আমি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনরায় ব্যক্ত করছি।
এর আগে ভারতের আর্থিক ও ব্যবসাবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মানিকন্ট্রোলের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বাংলাদেশের কাছে প্রতিষ্ঠানটির পাওনা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। বিপুল টাকা পাওনা হলেও প্রতিষ্ঠানটি বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
আদানি গ্রুপের ঝাড়খন্ডের এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চুক্তি রয়েছে। চুক্তি অনুসারে প্রতি মাসে বাংলাদেশের কাছে গ্রুপটির পাওনা ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার। তবে সময়মতো অর্থ পরিশোধ না করায় প্রতিষ্ঠানটির পাওনা ৮০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
আদানির সঙ্গে ২০১৭ সালে বিপিডিসির ২৫ বছরের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ কেন্দ্রটি থেকে এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেবে, যা বাংলাদেশের মোট চাহিদার ১০ শতাংশ।
এদিকে আদানির বকেয়া বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, আদানির পাওনা ৪৯ কোটি ২০ লাখ ডলার পরিশোধে বাংলাদেশের বিলম্ব হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের বৃহত্তম টারবাইনের স্বীকৃতি পেয়েছে আদানি গ্রুপের টারবাইন প্রতিষ্ঠান আদানি উইন্ড। জার্মানির উইন্ড কনসালটিং অ্যান্ড অপারেশনাল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান উইনগার্ড জিএমবিএইচ আদানি উইন্ডকে এ স্বীকৃতি দেয়।
উইনগার্ড জিএমবিএইচ আইইসি সিস্টেম ফর সার্টিফিকেশন টু স্ট্যান্ডার্ড রিলেটিং টু ইকুইপমেন্ট ফর ইউজ ইন রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাপ্লিকেশন (আইইসিআরই) জানায়, আদানি উইন্ডের ৫.২ মেগাওয়াট সম্পন্ন উইন্ড টারবাইন জেনারেটর (ডব্লিউটিজি) সর্বোচ্চ গুণগত এবং নিরাপত্তা মান পূরণ করে এবং এ টারবাইনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এর মাধ্যমে বিশ্ব বাজারের জন্য উৎপাদন শুরু করতে পারবে আদানি উইন্ড।
আদানির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত আইইসি ৬১৪০০ সিরিজের মান, ডিজাইন, টেস্টিং এবং ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ক্ষেত্রে যে মানদণ্ড ধরা হয়, তার সঙ্গে আদানির ডব্লিউটিজির সামঞ্জস্যতা রয়েছে স্বীকার করে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। উইনগার্ড ডব্লিউটিজি প্রোটোটাইপের পরীক্ষাটি ভারতের গুজরাটের মুন্দ্রায় চালানো হয়েছে।