৩৯ বছর বয়সী অর্থমন্ত্রী ইউলিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব জেলেনস্কির
ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিডেঙ্কোকে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
টানা সাড়ে তিন বছর ধরে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সংঘাত চলছে এবং এর মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে বড় ধরনের রাজনৈতিক রদবদলের দিকে হাঁটলেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইউলিয়া সভিরিডেঙ্কোর নাম প্রস্তাব করেছেন। সোমবার সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, “আমি ইউলিয়া সভিরিডেঙ্কোকে ইউক্রেনের সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি এবং সরকারের কাজকর্মে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার প্রত্যাশা করছি। খুব শিগগিরই আমি নতুন সরকারের কর্মপরিকল্পনা দেখতে চাই।”
বর্তমানে ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সভিরিডেঙ্কো। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজসম্পদ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি চুক্তি সইয়ের ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে আলোচিত। ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের মধ্যে টেলিভিশন সম্প্রচারিত তর্ক-বিতর্কের পর ওই চুক্তি ভেস্তে যায়। কিন্তু এরপর সভিরিডেঙ্কো নিজেই যুক্তরাষ্ট্র সফর করে আলোচনায় বসেন এবং চুক্তিটি সফলভাবে সম্পন্ন করেন।
জেলেনস্কি সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি নিজের মন্ত্রিসভায় কিছু পরিবর্তন আনতে চান, বিশেষ করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের চতুর্থ বছরে ইউক্রেন আরও সংঘবদ্ধ ও কার্যকর হতে চায়।
গত সপ্তাহে ইতালির রোমে এক বৈঠকে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের বর্তমান রাষ্ট্রদূতের পরিবর্তে এমন কাউকে পাঠাতে চান যিনি “প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রেক্ষাপটে” শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবেন। এমনও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীকেই হয়তো নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠানো হতে পারে।
৩৯ বছর বয়সী ইউলিয়া সভিরিডেঙ্কো ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলের চেরনিহিভ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখান থেকেই তার সরকারি প্রশাসনিক কাজ শুরু হয়। দ্রুতই তিনি উচ্চপদে উঠে আসেন এবং প্রেসিডেন্টের দপ্তরের ডেপুটি প্রধান হন। এরপর ২০২১ সালে তিনি অর্থমন্ত্রী এবং উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
যদি ইউক্রেনের সংসদ তার মনোনয়ন অনুমোদন করে, তাহলে তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শেমিহালের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ২০২০ সাল থেকে তিনি ওই দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে অনুমোদন পেলে ইউলিয়া সভিরিডেঙ্কো হবেন ইউক্রেনের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ইউলিয়া টিমোশেঙ্কো ২০০৪ সালের ‘অরেঞ্জ বিপ্লব’-এর পর প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।