১৪ দিন পর দেশে চালু হলো ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপসহ সব সামাজিক মাধ্যম
প্রায় দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ও ইনস্টাগ্রাম খুলে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে টিকটকও সচল হয়েছে।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর ২টার পর থেকে কোনো ধরনের ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন অ্যাপ্লিকেশন ছাড়াই এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা যাচ্ছে। তবে ক্যাশ সার্ভার এখনো ক্লিয়ার না করায় ধীরগতি পাওয়া যাচ্ছে। এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কার্যালয়ে ব্রিফিং করে বিকেল থেকে সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ওই সময় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈঠক শেষে আমরা এ ব্রিফিং করছি। এটা শেষ হলেই ফেসবুক খুলে দেওয়া হবে। তখন ভিপিএন ব্যবহার কমবে। ইন্টারনেটে গতিও বাড়বে। ফেসবুকের ক্যাশ সার্ভার ঠিক হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবে সবাই তা ব্যবহার করতে পারবেন।
গত ১৮ জুলাই রাত ৯টার দিকে সারাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন করা হয়। ওই সময় থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোও বন্ধ ছিল। ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড এবং ২৮ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট সচল করে দেওয়া হলেও বন্ধই ছিল মেটার চারটি প্ল্যাটফর্ম ও টিকটক। তবে এ সময় ইউটিউব চালু ছিল।
এদিকে, ফেসবুক বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-ভিত্তিক ই-কমার্সসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। তাদের তথ্যমতে, প্রায় ২৫ লাখ মানুষ ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামভিত্তিক ব্যবসায় যুক্ত। তাদের আয়ের অন্যতম উৎসও এটা। ফলে দ্রুত ফেসবুক খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা।
আজ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মেটার চারটি প্ল্যাটফর্মের (ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জার) এবং টিকটকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
বৈঠকে শেষে ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আজকে আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে বিটিআরসিতে ডেকেছিলাম। সশরীরে আসতে না পারায় মেটার চারটি প্ল্যাটফর্ম অর্থাৎ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জারের পক্ষ থেকে মেটার প্রতিনিধি রেজান সারোয়ার ভার্চুয়ালি অংশ নেন। আর টিকটকের প্রতিনিধি সাইদুর রহমান সশরীরে অংশ নেন। তবে ইউটিউবের পক্ষ থেকে বুধবার রাতে ই-মেইল করে সময় চাওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তাদের দেখিয়েছি কীভাবে তারা নিজেরাই নিজেদের গাইডলাইন মানছেন না। সেগুলো দেখে তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ভবিষ্যতে তারা এগুলো মেনে চলবে। বাংলাদেশের সংবিধান এবং তাদের যে কমিউনিটি গাইডলাইন রয়েছে, তা অনুসরণ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বৈঠকের পরই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারসহ সব মাধ্যম খুলে দেওয়া হবে।