November 23, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

স্বাধীন হয়েছি স্থিতিশীল হতে পারিনি : ফখরুল

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শক্ত করে দাঁড় করিয়ে রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৯ আগস্ট) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ছাত্ররা নতুন কিছু শিক্ষা দিয়েছে… এটা আমাদের নেয়া উচিত। দেখুন আন্দোলন বুকের রক্ত দিয়ে আপনাদের নিশ্চয় আবু সাঈদের কথা মনে আছে, বন্দুকের সামনে, রাইফেলের সামনে হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছে, বলছে গুলি আরও করো। আমি অভিভূত হয়ে যাই, সেই ১৯৭০ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে দেখেছি আর দেখলাম এই ছাত্র-জনতার আন্দোলস, যা কখনো ভুলার না।

আমি অনুরোধ করব, আমরা স্বাধীন হয়েছি ঠিকই, এখনো স্থিতিশীল হতে পারিনি। এখনো গণতন্ত্রকে আমরা ঠিক সেভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। এখন অন্তর্বতী সরকার আছে। এই সরকারকে আমরা সকলকে সমর্থন করে শক্ত করে দাঁড় করিয়ে রাখতে হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে তার ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বব চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে ও শামসুজ্জামান মেহেদির সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এএসএম আবদুল হালিম, আবদুস সালাম, আফজাল এইচ খান, আবদুল হাই শিকদার, কেন্দ্রীয় নেতা রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এম সিরাজুল হক, নিলোফার চৌধুরী মনি, আবদুল বারী ড্যানি, রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী, সুলতান মাহমুদ বাবু, ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের জামাতা মাহমুদুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, যারা এই অন্তর্বতীকালীন সরকার চালাচ্ছেন তারা রাজনীতি বুঝেন না, তারা রাজনীতি করেন না। তারা একটা অল্প সময়ের জন্য এসে এই রাষ্ট্রকে যে ধ্বংস করে দিয়েছে সেটাকে একটু টেনে তোলার চেষ্টা করছেন। এখন এই সময়ে কোনো নেতিবাচক কথা বলে বা কোনো নেতিবাচক কাজ করে আমাদের এই প্রচেষ্টাকে ভন্ডুল করে দেয়া একেবারে ঠিক কাজ হবে না। আমরা দেখি, আমরা সহায়তা করি।

ইনশাআল্লাহ অতীতের মতো এবার আমরা সফল হবো। আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠন করতে পারব এবং সেটা সরকার গঠন করবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেখবেন আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলাম, ছাত্র নেতারা এই সংস্কারের কথাই বলছেন। এই সংস্কারকে আমরা স্বাগত জানাই। আজকে ধৈর্য ধরে আমাদের দায়িত্ব হবে যে, নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে সেই নতুন অধ্যায়কে বরণ করে নিতে হবে। আজকে যারা এখানে এই বিজয়কে ম্লান করে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলক, তারা দেশপ্রেমিক না, তারা দেশদ্রোহী। তাদের আপনাদের রুখে দিতে হবে, তাদের আপনাদের পরাজিত করতে হবে। আমাদের ছেলেদের বুকের রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি সেই স্বাধীনতাকে বিনাস করে দিতে পারি না। এক ফ্যাসিবাদ গেছে আরেক নয়া ফ্যাসিবাদের আভিভূত হতে দিতে পারি না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ আজকে দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশের বিজয়কে ভণ্ডুল করে দেওয়ার জন্য… এই কথাটা আমি জোরের সঙ্গে বলছি। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের যে শত্রু যারা বাংলাদেশকে দাবিয়ে চলছে তাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত বাংলাদেশের জনগনের ভালোবাসা পেতে পারে বলে আমি মনে করি না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং চলমান আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আমাদের ছোট-খাটো বিভেদ ভুলে গিয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই, গণতন্ত্রের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে সেই সম্ভাবনাকে আমরা কিভাবে কাজে লাগাতে পারি, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি সেজন্য কাজ করি একসাথে। আজকের তরুণরা জেগে উঠেছে, এদেরকে ব্যর্থ হতে যেন আমরা না দেই। এদের যে আশা-আকাঙ্খা, যে স্বপ্ন তারা দেখছেন, এটাকে মিলাতে হবে, এটাকে মিলিয়ে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

শেয়ার করুন: