সাবেক অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল পরিবারের বিরুদ্ধে চার মামলা
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেইসঙ্গে প্রায় ২০০ কোটি টাকার ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত’ সম্পদের তথ্য পেয়ে আলাদা চার মামলা দায়ের করেছে সংস্থাটি। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে ১৬৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বেশি মূল্যের ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের মামলা দায়েরের ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের পক্ষ থেকে করা চার মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মুস্তফা কামাল ও তার স্ত্রী কাশমিরী কামালের ‘অবৈধ’ সম্পদের পরিমাণ যথাক্রমে ২৭ কোটি ৫২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৩১ টাকা ও ৪৪ কোটি ১১ লাখ ৬২ হাজার ১৪৬ টাকা।
আর তাদের মেয়ে কাশফি কামাল ও নাফিসা কামালের ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত’ সম্পদ যথাক্রমে ৩১ কোটি ৭৮ লাখ ৮৩ হাজার ১৯৫ টাকা ও ৬২ কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৬ টাকা।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের ৩২টি ব্যাংক হিসাবে ৪৪৬ কোটি ৪২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮৮ টাকা, কাশমিরী কামালের ২০টি ব্যাংক হিসাবে ২৬ কোটি ৬৪ লাখ ১ হাজার ১৩৩ টাকা, কাশফি কামালের ৩৮টি ব্যাংক হিসাবে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ২৩ হাজার ৫৪৮ টাকা ও নাফিসা কামালের ১৭টি ব্যাংক হিসাবে ১৯৯ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৭ টাকা লেনদেন হয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর মুস্তফা কামালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তখন থেকেই তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না।
গত বছর ২২ আগস্ট সাবেক অর্থমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
কুমিল্লা-১০ (কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, লালমাই ও নাঙ্গলকোট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুস্তফা কামাল এর আগের মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। গত মন্ত্রিসভায় তার জায়গা হয়নি।
তিনি বিসিবির ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সভাপতিও ছিলেন। তার ব্যবসায়ী মেয়ে নাফিসা কামাল ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক হয়ে আলোচিত হয়েছেন বিভিন্ন সময়।
গত ১৮ আগস্ট দুদক মুস্তফা কামালের স্ত্রী-কন্যা এবং তিন সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়।
সেদিন দুদকের তরফে বলা হয়, এ সংক্রান্ত যে অভিযোগ দুদক হাতে পেয়েছে, তাতে মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরী কামাল, তাদের মেয়ে নাফিসা কামাল, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজামউদ্দিন হাজারী, ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ যুক্ত আছেন ওই সিন্ডিকেটে।