August 28, 2025
আন্তর্জাতিক

সাগরপথে ইউরোপমুখী ১৫ হাজার অভিবাসীর যাত্রা ঠেকিয়েছে লিবিয়া

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রকাশিত সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে ভূমধ্যসাগরে প্রায় পাঁচশ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে যাত্রাপথে আটক করেছে লিবিয়ার কোস্টগার্ড। আটককৃতদের মধ্যে ২৯ জন নারী এবং ১৫ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। তাদের লিবিয়াতে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অধিকাংশই অর্থাৎ ৪২৬ জন লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চল থেকে যাত্রা করেছিলেন। বাকি ৬৫জন দেশটির উপকূলীয় অঞ্চল থেকে নৌকায় চড়ে যাত্রা করেছিলেন।

অবশ্য ভূমধ্যসাগরে লিবিয়ার কোস্টগার্ডের এমন তৎপরতা নতুন নয়। ইউরোপমুখী অভিবাসন ঠেকাতে আফ্রিকার এই দেশটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে লিবিয়ার কোস্টগার্ড মোট ১৪ হাজার ৫৫৪ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ইউরোপমুখী যাত্রাপথে আটক করে লিবিয়াতে ফেরত পাঠিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে পাঁচশ শিশু। তাছাড়া, মোট অভিবাসীদের ১০ ভাগ নারী বলে পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চুক্তির অংশ হিসেবে ভূমধ্যসাগরে কঠোর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে আফ্রিকার এই দেশটি।

প্রসঙ্গত, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপমুখী যাত্রা ঠেকাতে সাগরে অভিযান চালানোর বেশিরভাগ অর্থ দিয়ে থাকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ ছাড়া আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়া, মিসর, আলজেরিয়া এবং মৌরিতানিয়ার সাথেও এমন চুক্তি রয়েছে ইইউর।

এদিকে, ইইউর কিছু দেশ যেমন ইতালি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লিবিয়ার সরকারের সাথে সরাসরি চুক্তি সম্পন্ন করছে। এই তালিকায় সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ গ্রিস।

• সমুদ্রে শত শত মৃত্যু

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে প্রতিবছর হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপের পৌঁছানোর চেষ্টা করে থাকেন। আগামী কয়েক সপ্তাহে অভিবাসীদের এই ঢল বাড়তে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় মানবপাচারকারীরা এই সুযোগে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সাগরে ঠেলে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরের এই যাত্রাপথে চলতি বছর প্রায় চারশ জন অভবিসানপ্রত্যাশী প্রাণ হারিয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর হিসেব মতে, ৩১৮ অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ রয়েছে। যদিও নিহত ও নিখোঁজের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে, সাগরে হাজার হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীর ইউরোপমুখী যাত্রা ঠেকিয়ে সফলতা দেখালেও, ফেরত যাওয়া এই অভিবাসীরা এবং দেশটির ভেতরে থাকা অভিবাসীরা অমানবিক এবং নিষ্ঠুর জীবন যাপন করছেন বলে দাবি করছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

প্রতিবেদনে প্রায়ই আটককেন্দ্রগুলোতে অভিবাসীদের অপিরচ্ছন্ন থাকার জায়গা, তাদের সাথে অমানবিক আচরণ এবং ক্ষুধাে যন্ত্রণায় মৃত্যুর ঘটনার খবর উঠে এসেছে।

• ইতালিতে বাড়ছে আগমন

ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে আসা অভিবাসীর সংখ্যা কমে আসলেও কিছু কিছু দেশে এই সংখ্যা অব্যহত রয়েছে। সাগরতীরের দেশ ইতালি সরকারের ২৪ আগস্ট প্রকাশিত এক পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের শুরু থেকে ওই সময় পর্যন্ত উত্তর আফ্রিকা থেকে যাত্রা করে মোট ৪০ হাজার ৫১০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালিতে পৌঁছেছেন। জাতীয়তা হিসাবে এদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা।

গত ১৮ আগস্ট জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার প্রকাশিত তথ্য বলছে, মোট ৪০ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতালি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ৩৮৯ জন লিবিয়া থেকে যাত্রা করেছেন এবং তিন হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী উত্তার আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়া থেকে যাত্রা করেছেন। ইনফোমাইগ্রেন্টস।

শেয়ার করুন: