November 28, 2024
জাতীয়লেটেস্টশীর্ষ সংবাদ

সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসা-রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার

কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার কোনো ঘাটতি হয়নি এবং তাদের চিকিৎসায় যা যা প্রয়োজন, সব করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, (আহতদের) চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন, সরকার করে যাচ্ছে এবং করবে। চিকিৎসা শেষে তাদের অন্তত আয়-রুজির ব্যবস্থা যাতে হয়, সেটাও আমরা করবো।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় আহতদের খোঁজ খবর নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

বর্বরতার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীর কাছে এটুকুই বলবো যে, যারা অপরাধী তাদের খুঁজে বের করে দিতে হবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এই বর্বরতার বিরুদ্ধে, এ ধরনের জঘন্য ঘটনার বিরুদ্ধে।

তিনি বলেন, আমি আবারও বলবো, দেশবাসীকে বলবো যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করে, কোথায় কে আছে খুঁজে বের করা, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া… যেন আর কখনো এদেশের মানুষের জীবন নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে। যেটা আমি কখনো চাইনি। কখনোই চাইনি এভাবে মানুষ আপনজন হারাবে, এভাবে মৃত্যুর মিছিল হবে, এটা কখনো চাইনি। আজ বাংলাদেশে সেটাই করলো।

সহিংসতায় যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত বেদনাদায়ক অবস্থা। আজ এতগুলো মানুষ আহত-নিহত।

তিনি বলেন, এতগুলো মানুষ, আমি তো আমার সব হারিয়েছি, বাবা-মা ভাই সব হারিয়েছি। আমি জানি মানুষ হারানোর বেদনা কী। আমার চেয়ে বোধহয় আর কেউ বেশি জানে না।

জামায়াত-শিবির, বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এই জামায়াত-শিবির, বিএনপি, ছাত্রদল তারাই এই সুযোগটা নিয়ে, কোটা আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে সারা দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। এদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব বোধ নেই। দেশের প্রতি কোনো মায়া-মমতা নেই, দেশের প্রতি কোনো দায়িত্ববোধ নেই। আর মানুষকে এরা মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন এতে অর্জনটা কী হলো। কতগুলো মানুষের জীবন চলে গেলো। কতগুলো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো।

শেখ হাসিনা বলেন, সেই ৭১ সালের কথা মনে পড়ে। ২০১৩ তে ৩ হাজার ৮০০ মানুষ, মানুষকে পোড়ানো, মেরে ফেলা, আবার ২০১৪ তে সেই একই। ২০২৩ এর ২৮ অক্টোবর, পুলিশকে যেভাবে মেরেছে, এবারও সেই পুলিশকে মারা না শুধু, মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখা। আওয়ামী লীগের (কর্মী) গাজীপুরের, তাকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা। একি বর্বরতা, একি জঘন্য! কোন মনুষ্যত্ব বোধ নেই।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সবাইকে আহ্বান করবো এই যে বর্বরতা, এই যে সন্ত্রাস-জঙ্গী এবং মানুষকে হত্যা, এটা সম্পূর্ণ জঙ্গী কাজ। মানুষের হাত কাটা, পা কাটা, রগ কাটা, চট্টগ্রামে আমাদের ছাত্রলীগের ছেলেদের ৬ তলা থেকে ফেলে দেওয়া, তাদের রগ কেটে দেওয়া। পড়ে যাওয়ার পরেও তাদের ওপর হামলা। এটা কোন ধরনের বর্বরতা!

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখি। এখানে দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য আমি কাজ করি। আমি যা করি, সব মানুষের জন্য করি। কে আমাকে সমর্থন করে, কে করে না আমি সেটা চিন্তা করি না। কারণ আমি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করেছে তাদের সেবা করতে। সেভাবেই আমি সেবা করি।

শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং দেশের সমৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাচ্ছিলাম দেশে শান্তি থাকবে, দেশের মানুষের উন্নতি হবে। দেশের মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে। আমি সব দিকে ব্যবস্থা করেছি। মানুষের সেবা করার যা যা সবই নষ্ট করবে, সবই ধ্বংস করে দেবে, সবই পোড়াবে।

সরকার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তো সব দাবি মেনেই নিয়েছি। তারপর আবার কেন? সেটাই আমার প্রশ্ন। এটা কি জঙ্গীবাদকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য?

দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীকে বলবো আপনারা দোয়া করেন। যেন এই জঙ্গীবাদ এবং জুলুমের হাত থেকে মানুষ মুক্তি পায়। মানুষের জীবনে শান্তি আসে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের খোঁজ খবর নেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

শেয়ার করুন: