সরকার ইন্টারনেট ব্লক করেনি, ধীরগতিও করেনি: পাকিস্তানের মন্ত্রী
পাকিস্তানে ইন্টারনেট পরিষেবায় সম্প্রতি যে বিভ্রাট দেখা দিয়েছে, তাতে সরকারের কোনো হাত নেই বলে দাবি করেছেন দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী শাজা ফাতিমা খাজা। সেই সঙ্গে এই সমস্যার দায় দেশের ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহারকারীদের ওপর চাপিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, “আমি শপথ করে বলতে পারি যে ইন্টারনেট পরিষেবার এই বিপর্যয় সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে ঘটেনি। সরকারিভাবে ইন্টারনেট ব্লক বা ধীরগতি করে দেওয়ার কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি।’
“আমরা সম্প্রতি এই সমস্যাটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তারা বলেছেন, দেশে ভিপিএন ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। মোবাইল ফোন ইন্টারনেটের ধীরগতির প্রধান কারণ এটি।”
ইন্টারনেট পরিষেবার মান উন্নয়নে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সম্প্রতি সরকারি বাজেটের পাশাপাশি অতিরক্ত ৬ শ’ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন শাজা ফাতিমা খাজা।
গত ১৪ আগস্ট থেকে পাকিস্তানে ইন্টারনেট পরিষেবার বিভ্রাট শুরু হয়। দেশজুড়ে ইন্টারনেটের গতি ব্যাপকভাবে কমে যায়, এমনকি কোনো কোনো অঞ্চল সম্পূর্ণ ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ডেটা উভয় পরিষেবাতেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
বর্তমানে ব্রডব্যান্ডের গতি খানিকটা বাড়লেও মোবাইল ডেটা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হয়নি। দেশটির ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থাগুলো এই সংকটের কোনো কারণ জানাতে পারেনি।
ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থা এবং সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে ব্যাখা না করা হলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ইন্টারনেটের এই দূরাবস্থার প্রধান কারণ হলো ‘ফায়ারওয়াল’ নামের একটি বিশেষ নিরাপত্তা সফটওয়্যারের ত্রুটিপূর্ণ ইনস্টলেশন।
দেশজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাকে আরও উন্নত ও নিরাপদ করতে গত জুলাই মাসের শেষ দিকে ‘ফায়ারওয়াল’ ইনস্টল করার ঘোষণা দেয় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার। ইনস্টলেশনের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয় ১৪ আগস্টকে। ১৯৪৭ সালে এই দিনেই ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা পেয়েছিল পাকিস্তান।
গত মাসে পাকিস্তানের ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটির (পিটিএ) এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া সংবাদের জোয়ার ঠেকাতে ফায়ারওয়াল সফটওয়্যার চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের সরকার।