November 25, 2024
আন্তর্জাতিক

সংবিধান সংশোধন, দক্ষিণকে ‘শত্রু রাষ্ট্র’ তকমা দিলো উত্তর কোরিয়া

প্রতিবেশি দক্ষিণ কোরিয়াকে ‘শত্রু রাষ্ট্র’ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত করেছে উত্তর কোরিয়া।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ এ তথ্য জানিয়েছে।

কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলি তাদের নেতার জাতীয় লক্ষ্য হিসেবে দুই কোরিয়ার একীকরণ বাদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সংবিধান সংশোধন করেছে।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন ২০২৩ সালেই ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি আর দক্ষিণের সঙ্গে একত্রীকরণের চেষ্টায় নেই।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়াকে ‘এক নম্বর শত্রু রাষ্ট্’ আখ্যা দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন কিম। সে পথে হেঁটেই এবার সংবিধান সংশোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন তিনি।

এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পদক্ষেপ ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার আন্তঃকোরিয়া সড়ক এবং রেললাইনের একাংশ উড়িয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দুই কোরিয়ার মধ্যকার কড়া নিরাপত্তাধীন সীমান্তে উত্তর কোরিয়া তাদের অংশে এই সড়ক উড়িয়ে দেয়।

দক্ষিণের সঙ্গে একত্রীকরণ না চাওয়ার ঘোষণা কিম জং-উন গতবছর ডিসেম্বরেই দিয়ে দেওয়ায় কিছু পর্যবেক্ষক এবারে উত্তর কোরিয়ার সংবিধান সংশোধনকে মূলত প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

কিম এবছর জানুয়ারিতেই দক্ষিণের সঙ্গে একত্রীকরণ আর সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন। তারপর থেকেই দুই কোরিয়ার মধ্যে একের পর এক বাক যুদ্ধ চলে আসছে। বিশেষ করে গত কয়েক মাসে উত্তেজনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে।

র ্যান্ড কর্পোরেশনের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক ব্রুস বেনেট বলেন ‘২০২৩ সালের শেষের দিকের ঘোষণার পর থেকে সংঘাতের ঝুঁকি এবং সংঘাত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।’

তখন থেকেই কিম ও তার বোন দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি পারমাণবিক বিস্ফোরণের হুমকি দিয়েছেন। নানা পদক্ষেপের মাধ্যমে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছেন।

তবে অনেকে আশা করেছিলেন, পিয়ংইয়ং গত সপ্তাহে সুপ্রিম পিপলস অ্যাসেম্বলির (এসপিএ) বৈঠকে একত্রীকরণ এবং সীমান্ত নীতিতে সাংবিধানিক সংশোধনী আনবে। কিন্তু এ ধরনের কোনও পরিবর্তন এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

বিশ্লেষকরা অবশ্য এখনও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সম্ভাবনা নিয়ে সন্দিহান।

বুসানের ডং-এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও কূটনীতির শিক্ষক অধ্যাপক কাং ডং-ওয়ান বলেন, ‘পরিস্থিতি যুদ্ধের পর্যায়ে চলে যাবে কিনা তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। উত্তর কোরিয়া অভ্যন্তরীন সংহতি জোরদার করার জন্য সামরিক সংঘাতকে ব্যবহার করছে।’

ওদিকে, সিউলের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক কিম ডং-ইয়ুপ পিয়ংইয়ংয়ের পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ করার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

তিনি বলেন, ‘এ ধরনের সংঘাত যে ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে সে সম্পর্কে শাসকগোষ্ঠী ভালোভাবেই অবগত।’

শেয়ার করুন: