শেখ হাসিনার শাসনকালের শেষ ৫ বছরে হত্যাকাণ্ড ১৬ হাজারের বেশি
দেশে প্রতিদিন গড়ে ৯ জনের বেশি মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে শেখ হাসিনার শাসনকালের শেষ ৫ বছরে। যার মোট সংখ্যা ১৬ হাজারের বেশি। এই সময়ে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে প্রায় আড়াই হাজার। পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা অপরাধ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের মেয়াদে ২০২৩ সালের নভেম্বরে নওগাঁয় খুন হন বিএনপি নেতা কামাল আহেমদ। দিনে-দুপুরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। আওয়ামী লীগের দেড় দশক মেয়াদে রাজনৈতিক কারণ বা সামাজিক অস্থিরতায় অনেক মানুষ কামালের মতোই নৃশংসতার শিকার হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, শুধু শেষের ৫ বছরেই দেশে হত্যার ঘটনা ১৬ হাজারের বেশি। গড়ে অন্তত ৯ জন খুন হয়েছেন দিনে। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত অপহরণের শিকার প্রায় আড়াই হাজার। এই সময়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ মিলেছে ৯ হাজার ৯৫৫টি। আর ডাকাতির মামলা হয়েছে ১৬ শ’। পাঁচ বছরে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাও আঁতকে ওঠার মত।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা বলছেন, গদি টিকিয়ে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে খেয়ালখুশি অনুযায়ী ব্যবহার করেছে হাসিনা সরকার। তাতে বেড়েছে অপরাধ।
তিনি আরও বলেন, বিগত সরকারের সময় দেখা গেছে মাত্রাতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার হয়েছে। এর সঙ্গে নীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান মনে করেন, মামলার নথি ঘেটে যে পরিসংখ্যান মিলেছে বাস্তব অবস্থা ছিল তার চেয়েও ভয়াবহ।
তিনি বলেন, গত ৫ বছরের যে সংখ্যাটি পুলিশ বলছে সেখানে সব ধরনের অপরাধে মানুষ মারা গেছে। এর একটি বড় অংশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতনে অথবা তথাকথিত ক্রসফায়ারের নামে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।
কমিটি করে বিগত ১৫ বছরের অপহরণ, নির্যাতন ও গুম-খুনের ঘটনা তদন্তের পরামর্শ দিয়েছেন নূর খান। অন্তর্বর্তী সরকার কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সামাজিক অপরাধ কমে আসবে বলেও মনে করেন তিনি।
নূর খান বলেন, এই ধরনের মানবতাবিরোধী যে অপরাধগুলো হয়েছে, যেখানে মানবাধিকার লুণ্ঠিত হয়েছে সেই ঘটনাগুলো যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।