November 15, 2024
আন্তর্জাতিক

শপথ নেয়ার ৬ মাসের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত হাইতির প্রধানমন্ত্রী

ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ হাইতির প্রধানমন্ত্রী গ্যারি কনিলকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। দায়িত্ব নেয়ার ছয় মাসের কম সময়ের মধ্যে ক্ষমতাসীন ট্রানজিশনাল প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিল (টিপিসি) তাকে বরখাস্ত করেছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) কাউন্সিলের ৯ সদস্যের মধ্যে ৮ জনের স্বাক্ষর করা একটি নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে কনিলের স্থলাভিষিক্ত করার জন্য ব্যবসায়ী ও হাইতির সাবেক সিনেট প্রার্থী অ্যালিক্স দিদিয়ার ফিলস এইমির নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কনিল ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা। হাইতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর (গ্যাং) নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে চলমান নিরাপত্তা সংকটের মধ্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছিল, তিনি দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজনের পথ তৈরি করবেন। ২০১৬ সালের পর দেশটিতে আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়নি।

এক চিঠিতে কনিল দাবি করেন, তাকে অবৈধভাবে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স সে চিঠিটি দেখেছে। চিঠিতে কনিল হাইতির ভবিষ্যৎ নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছেন।

হাইতিতে বর্তমানে কোনো প্রেসিডেন্ট কিংবা পার্লামেন্ট নেই। হাইতির সংবিধান অনুযায়ী, একমাত্র পার্লামেন্টই ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করতে পারে। গত ৩ জুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন কনিল।

কনিলের পূর্বসূরি অ্যারিয়েল হ্যানরি সশস্ত্র গোষ্ঠীদের একটি নেটওয়ার্কের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত এপ্রিলে হাইতির ট্রানজিশনাল প্রেসিডেনশিয়াল কাউন্সিল (টিপিসি) গড়ে ওঠে। হাইতির সশস্ত্র গোষ্ঠীদের ওই নেটওয়ার্ক পোর্ট অব প্রিন্সের বিভিন্ন অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়।

২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি গায়ানায় এক সম্মেলনে উপস্থিত হতে হাইতি ছাড়েন হেনরি। আর সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা শহরের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দখল করে নেন। তারা হেনরিকে আর দেশে ফিরতে দেননি।

টিপিসির কাজ হলো, ক্যারিবীয় দেশটিতে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে, গত জানুয়ারি থেকে হাইতিতে ৩ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। পাঁচ হাজারের বেশি মানুষকে বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে হয়েছে। হাইতিকে বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের হিসাব অনুসারে, হাইতিতে ২০ লাখ মানুষের জন্য জরুরি ভিত্তিতে খাবার প্রয়োজন। মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের যথেষ্ট খাবার নেই।

হাইতিতে সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে আট বছর আগে। তখন জোভেনেল মইসি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট পদটি ফাঁকা হয়ে যায়।

দেশের ক্ষমতাকেন্দ্রে এমন শূন্যতাকে পুঁজি করে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো হাইতির বিভিন্ন জায়গায় তাদের নিয়ন্ত্রণ বিস্তৃত করছে। আইনের প্রয়োগ না থাকায় হাইতির বিভিন্ন জায়গায় কার্যত অনাচার চলছে।

শেয়ার করুন: