লেবাননের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট সেনাপ্রধান জোসেফ আউন। আজ বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে তিনি প্রেসিডেন্ট হন। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদটি খালি ছিল। এর মধ্য দিয়ে এই অচলাবস্থার অবসান হলো।
প্রেসিডেন্ট হতে পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা তথা ৬৫ ভোটের দরকার ছিল জোসেফের। তিনি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পেলে পার্লামেন্ট সদস্যদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। এর আগে গতকাল বুধবার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ১২৮ আসনের পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়। তবে প্রথম দফার ভোটে প্রয়োজনীয় এক-তৃতীয়াংশ ভোট পেতে ব্যর্থ হন জোসেফ। প্রথম দফা ভোটে ৭১ জন পার্লামেন্ট সদস্যের সমর্থন পান জোসেফ; কিন্তু প্রয়োজনীয় ৮৬ ভোটের চেয়ে ১৫ ভোট কম পান তিনি। এরপর দ্বিতীয় দফায় গড়ায় ভোট।
ভূমধ্যসাগর উপকূলীয় দেশটিতে প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের মেয়াদ ২০২২ সালের অক্টোবর শেষ হয়। এরপর থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য ছিল। হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে বিরোধের কারণে এর আগে ১২ দফা ভোট ভেস্তে যায়। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতির পর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ে। যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে দুই মাসের মধ্যে ইসরায়েল সীমান্তে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের পাশাপাশি লেবাননের সেনা মোতায়েন করা হবে। সে হিসাবে সেনা মোতায়েনের আর মাত্র ১৭ দিন বাকি আছে।
২০১৯ সাল থেকে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটে জর্জরিত লেবাননের হাল ধরে দেশটির সেনাবাহিনী। তবে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের সাথে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের নামের মিল থাকলেও তাদের মধ্যে কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই।
জোসেফ আউন ১৯৬৪ সালের ১০ অক্টোবর বৈরুতের পূর্ব উপশহর সিন এল-ফিলে জন্মগ্রহণ করেন। আউনের পরিবার মূলত জেজিন জেলার আইশিয়াহ গ্রামের দক্ষিণ লেবাননের বাসিন্দা।
তিনি মূলত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডিগ্রি এবং সামরিক অধ্যয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একজন অফিসার ক্যাডেট হিসাবে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় ১৯৮৩ সালের মে মাসে তিনি মিলিটারি কলেজে ভর্তি হন।
২০১৭ সালের মার্চ মাসে সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার আগে আউন বেশ কয়েকটি পদোন্নতি পেয়েছিলেন। জেনারেল আউন ওয়াশিংটন ও রিয়াদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সেনাপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এরপর বক্তব্যে বলেন, লেবাননের জন্য একটি নতুন যুগ শুরু হলো। তিনি দেশটিকে বহুমুখী অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়াও তিনি দেশের অস্ত্রভাণ্ডার শুধু রাষ্ট্রীয় অধীনে থাকবে বলে জানান যা ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।