লেবাননের খ্রিস্টান গ্রামে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত ১৮
লেবাননের উত্তরে খ্রিস্টান অধ্যুষিত জঘর্তা জেলার একটি গ্রামে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ১৮ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছেন।
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর সোমবার (১৪ অক্টোবর) উত্তর লেবাননে এই প্রথমবার এমন হামলা চালালো ইসরায়েল।
এর আগে রোববার রাতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হিজবুল্লাহর ২০০ লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে, যা দেশটির জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পাশাপাশি গাজায়ও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
লেবাননের রেডক্রস জানিয়েছে, বিমান হামলা জঘর্তা জেলার একটি খ্রিস্টান অধ্যুষিত গ্রামে সংঘটিত হয়েছে। এ অঞ্চলটি হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এলাকাগুলো থেকে অনেক দূরে অবস্থিত।
স্থানীয় জনগণ এবং লেবাননের সরকারের মতে, এই হামলার শিকার হওয়া গ্রামটি যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল না। এর ফলে হামলাটিকে সুশীল সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোও নিন্দা জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী দাবি করেছে যে, তারা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর ২০০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং বেশ কিছু ‘সন্ত্রাসী’কে নিশ্চিহ্ন করার কথা জানিয়েছে। লেবাননের সামরিক বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, এ আক্রমণে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্তত ৫১ জন নিহত হয়েছেন।
লেবাননের ইরান-সমর্থিত সংগঠন হিজবুল্লাহ রোববার মধ্য-উত্তর ইসরায়েলের একটি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে, যাতে অন্তত চার ইসরায়েলি সেনা নিহত এবং ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এই হামলার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টা হামলার আশঙ্কা বাড়ছে।
গাজার উত্তরাঞ্চলে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে সোমবার বিমান হামলায় ১০ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনী একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রকে লক্ষ্যবস্তু করে আক্রমণ চালায় বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।
এছাড়া গাজার মধ্যাঞ্চলে দেইর আল-বালাহ শহরের আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে বিমান হামলায় ৪ জন নিহত এবং অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন।
গাজায় চলমান সংঘর্ষে নিহত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ২৮৯ জনে এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৯৮ হাজার ৬৮৪ জন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তে বলেছেন, রোববারের হামলা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দ্রুত ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের আক্রমণকে অপ্রয়োজনীয় এবং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য বিপজ্জনক বলে আখ্যা দিয়েছে।
ইসরায়েলের হামলা এবং লেবাননের প্রতিরোধ কার্যক্রম মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে গুরুতর সংঘাতের মধ্যে পরিণত হয়েছে, যা আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে।