লন্ডনে জয়শঙ্করের ওপর হামলার চেষ্টা, ছেঁড়া হলো ভারতীয় পতাকা
যুক্তরাজ্য সফরে যেয়ে হামলার মুখে পড়লেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। লন্ডনের চ্যাথাম হাউসের সামনে হামলাকারীরা তার গাড়ির কাছে চলে যান বলে অভিযোগ ওঠেছে। সেই সঙ্গে ভারতের জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওপর ওই হামলার নেপথ্যে রয়েছেন খলিস্তানপন্থীরা। বুধবার রাতে চ্যাথাম হাউসে একটি আলোচনাসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। খলিস্তানপন্থীরা পতাকা নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন অদূরে রাস্তার ওপর। পুলিশের সামনেই ভারতবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা।
জয়শঙ্কর কর্মসূচি শেষে বেরোনোর সময় বিক্ষোভকারীদের জটলা থেকে এক ব্যক্তি হঠাৎই ছুটে তার গাড়ির সামনে পৌঁছে যান। এরপর কনভয়ের সামনেই ভারতের জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় আরও কয়েকজন খলিস্তানপন্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কনভয়ের কাছে এসে স্লোগান দিতে শুরু করেন। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হলেও কিছুক্ষণ পরে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে নিয়ে যায়।
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্রিটেন সফরের সময় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ফুটেজ দেখেছি। বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির এমন কাজ নিন্দনীয়।’
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, জয়শঙ্করের মতো ভিভিআইপির নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিপজ্জনক গাফিলতি স্পষ্ট হয়েছে এই ঘটনায়। এই হামলার নেপথ্যে খলিস্তানপন্থী নেতা গুরপতবন্ত সিংহ পন্নুনের সংগঠন ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) রয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। অতীতে এই সংগঠনের সদস্যেরা ব্রিটেনে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দুরাইস্বামীর ওপর স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় আলবার্ট ড্রাইভের গুরুদ্বারে হামলা চালিয়েছিল। লন্ডনের ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও হামলার চেষ্টারও অভিযোগ রয়েছে এসএফজের বিরুদ্ধে।
ব্রিটেন সফরে গিয়ে বুধবার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কিয়র স্টার্মারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর। দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, জনগণের মধ্যে আদান-প্রদান বৃদ্ধি থেকে শুরু করে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির মতো নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী। তিনি ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন সে দেশের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামি এবং অন্যান্য বর্ষীয়ান নেতা।